Recent Post

সাপ-ওঝা: তুলি মুখোপাধ্যায় চক্রবর্তী

পাড়ায় ছোটখাটো মাস্তানি করতে করতে ক্লাব সেক্রেটারি। পার্টির নেতাদের নেকনজরে কাউন্সিলর থেকে এমএলএ। মৌরুসীপাট্টার দোপাট্টা গলায় বারো পাশ শ্রীমান রতন সমাদ্দার।

কাজের সাথে বাড়ল কুকাজ। এখন প্রতি রাত রঙিন হয় ভিন্ন ভিন্ন নারীভোজে। যোগানদার জুটেই যায়।

সুবল বাবুর ছোট ছেলে সুমন সদ্য বিবাহিত। সুন্দরী বউ। বড় ছেলে বাবলুর সমস্যা তার শরীরে নারী স্বত্তা বেশি। মহিলা চরিত্রে অভিনয় করে যাত্রা দলে কিন্তু পাড়ার কেউই জানে না সেকথা। অবিবাহিত সে। 

অদৃশ্য ফরমান এসেছে সুবলবাবুর বাড়ি। নতুন বউ নজরানা হবে নেতার। সকলে দুশ্চিন্তায়। বাবলু এগিয়ে আসে। 

বাবাকে বলে, “বউ সেজে আমি যাব বাবা, তারপর দ্যাখো…”

বাবার মৌন সম্মতি। 

বউ সেজে বাবলু রাতের অন্ধকারে গাড়িতে। 

মা কপালে জোড়হাত ঠেকিয়ে বলেন, “দুগ্গা দুগ্গা, মঙ্গল করো মা সবার।” 

আলোআঁধারি ঘরে ফুরফুরে সেন্টের গন্ধ ছড়িয়ে ঢুকলো নতুন মেয়ে। 

রঙিন গেলাস ততক্ষণে নেশায় ডুবিয়েছে নেতাকে। ঢুলুঢুলু চোখে জিভ জড়িয়ে আসছে। কোনও রকমে বললেন… না না, জাপটে ধরলেন। 

এক এক করে খুলে গেল বাস, বাইরের অন্তরের। একি !! চমকে চেঁচিয়ে ওঠেন শ্রীমান। “কে তুমি?”

মুখের উপর নিঃশ্বাস ফেলে নারী, পুরুষ কণ্ঠে বলে, “আমি বাবলু, পুরুষ খাঁচায় নারীমন। চেঁচামেচি করলেই বাইরে বেরিয়ে সবাইকে সব বলে দেব। টিভি মিডিয়া…” 

—”না না, কাউকে কিছু বলতে হবে না, তুমি যাও।”

—”বেশ, ভোর হবার আগেই আমি চলে যাব,  আর কোনো বউ মেয়ের সম্ভ্রমে যেন চোখ না পড়ে। তাহলেই সব ফাঁস করে দেব। সমস্ত ঘটনা এবং এখানে আসার ভিডিও আমি বাল্ক মেসেজ করেছি বন্ধুদের। প্রতিপক্ষের কাছে খুব তাড়াতাড়ি পৌঁছে যাবে।”

সাপের মাথায় গাছড়া। চুপসে গেলেন শ্রীমান নেতা। 

সেই থেকে ওনার নারীভোজ বন্ধ। পাড়ায় শান্তি।।

Author

  • তুলি মুখোপাধ্যায় চক্রবর্তী:

    লেখিকা তুলি মুখোপাধ্যায় চক্রবর্তী ১৯৭০ সালে খড়্গপুর শহরে জন্মগ্রহণ করেন। বাণিজ্য বিভাগে স্নাতক উত্তীর্ণ লেখিকা সাংসারিক কাজের ফাঁকেই লেখালেখির চর্চা করে যান। তাঁর ভালোলাগার বিষয়—বই পড়া, গল্প করা আর বেড়ানো। তাঁর লেখার অভ্যাস স্কুল জীবন থেকেই শুরু হয়। গল্প, কবিতা লিখতে ভালো লাগে তাঁর। বহু পত্রিকাতে লেখা প্রকাশিত হয়ে চলেছে নিয়মিতভাবে। ২০১৮ সালে প্রথম প্রকাশিত হয় এমনই এক লেখা। সেই ধারা এখনও অব্যাহত রয়েছে। তাঁর নিজস্ব সংকলন প্রকাশ পায় ২০১৯ সালে। এই সংকলনটি রাজভবন থেকে স্বয়ং রাজ্যপালের দ্বারা উন্মোচিত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Nabataru-e-Patrika-2023-9.jpg
ছোটো গল্প

কলার বাকল: রানা জামান

    জাবের ও নাভেদ বের হয়েছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল ভ্রমণে। ওরা চলে গেল নেত্রকোণা জেলার দুর্গাপুর উপজেলায়। সাদা সিমেণ্ট দেখবে। বাংলাদেশের আরেক মূল্যবান খনিজ; চিনামাটির তৈজসপত্র তৈরি করা হয়। পাহাড়ি এলাকায় ঘুরাঘুরি করতে ওদের বেশ লাগছে। ছোট ছোট পাহাড়ে উঠে ছবি তুলছে দেদার, সেল্ফিও নিচ্ছে। সকাল এগারোটা বাজছে। খিদে খিদে ভাব অনুভব করছে পেটে। চা পানের […]

    বিশদে পড়তে এখানে ক্লিক করুন
    ছোটো গল্প

    বোকার চালাকি: সৌমেন দেবনাথ

      দেখতে যেমন বোকা বোকা, কথাবার্তায়ও তেমন বোকা বোকা। কাজে-কর্মের ধরণ-ধারণেও বোকামি বোকামি ভাব। চলন-বলনেও বোকা বোকা দেখতে লাগা মানুষটার নাম আক্কাস। সহজ-সরল আর আলাভোলা এই লোকটাকে নিয়ে আমরা যথেষ্ট  মজা-মশকরা করি। যখন মন চায় তখনই তাকে ডেকে নিয়ে যেদিক সেদিক চলে যাই।

      বিশদে পড়তে এখানে ক্লিক করুন
      ছোটো গল্প

      মানসী: তুলি মুখোপাধ্যায় চক্রবর্তী

        হঁ বাবু, যে শরীর তুকে শান্তির ঘুম দেয়, একটা ছবি থাকবেনি তার! কুতোওও ছবি তুর আঁকা, বিকোয় দেশ বিদেশ, একটা লয় ইখানেই থাইকবে, মাটির ঘরে

        বিশদে পড়তে এখানে ক্লিক করুন