Recent Post

সমাজ চক্ষু: ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায়

সমাজ চক্ষু: ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায়

হামনপুর প্রাইমারি স্কুল। ধনু মাস্টার ছড়ি হাতে। ছাত্ররা তটস্থ।

—এই ব্যাটা সাধন…! নামতা বল্।

—আজ্ঞে… একে চন্দ্র, দুয়ে পক্ষ… দশে দিক। 

গড় গড় করে সাধন নামতা শেষ করল। 

—হুঁ… খুব মুখস্থ করেছিস দেখছি যে?  মাথায় বুদ্ধি গজগজ করছে। বস ব্যাটা…বস। তোর বাপকে বলেছিলাম না, এখন থেকেই মজদুরি খাটা শেখাতে। তা নয় স্কুল পাঠাচ্ছে, দিগগজ হবে! 

বাবা মানস… নামতা বলতো বাবা…।

মানস গ্রামের ধনী, রঘুপতি গোঁসাইয়ের ছেলে। নামতা বলতে উঠে একে চন্দ্রই বারবার বলতে থাকল। ধনু মাস্টার বেগতিক দেখে মানসের সঙ্গে নামতা পড়তে শুরু করেন দশে দিক পর্যন্ত।

—বেশ বাবা…  খুব ভালো ছেলে। বসো বাবা, বসো। 

এই সাধন…মানসের সেলেট জলে ধুয়ে নিয়ে আয়, উডপেনসিল ছুলে নিয়ে আয়।

স্কুলে টিফিনের ঘণ্টা বেজে উঠতেই সবাই টিফিন হাতে হইহই করে দৌড় দিল। শুধু সাধন বসে আছে তার নিজের জায়গায়। তার গরিব বাবা- মা তাকে টিফিন দিতে পারে না, তাই সে বসে বসে সেলেটে অঙ্ক কষে। পড়া পড়ে। 

এক সময় স্কুলের ছুটির ঘণ্টা বেজে ওঠে। সাধনও ব্যাগ গুছিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেয়। কিন্তু তার ছোট্ট মনে অনেক প্রশ্ন উঁকি দেয়। 

—”মাস্টারমশাইয়ের সব পড়া বলি। সব অঙ্ক সঠিক ভাবে কষতে পারি, তবুও কেন মাস্টারমশাই আমায় দূরছাই করেন?”

Author

  • ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায়

    বর্ষীয়ান লেখক শ্রীযুক্ত ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৫৭ সালে পূর্ব বর্ধমান জেলার সাতগেছিয়া গ্রামে। বাল্যকাল কেটেছে ওখানেই। বিদ্যালয় জীবন অতিবাহিত করেন সাতগেছিয়া শ্রীধরপুর অবিনাশ ইনিস্টিটিউশনে ও পরবর্তীতে কালনা কলেজ থেকে স্নাতক স্তরের পাঠ সম্পূর্ণ করেন। বর্তমানে হুগলি জেলার উত্তরপাড়ায় থাকেন। চাকুরি জীবন থেকে অবসর গ্রহণ করার পর এখন লেখালেখিতে অনেক বেশি সময় দিতে পারেন লেখক। লেখালেখি ছাড়াও তাঁর শখ ছবি আঁকা, গিটার বাজানো,যাত্রা থিয়েটার নাটকে অভিনয়, আবৃত্তি করা। একসময় ফুটবল খেলতেও ভালোবাসতেন তিনি। তাঁর কথায়,"ছবি আঁকা, গিটার বাজানো, যাত্রা-থিয়েটার, নাটক-আবৃত্তি এই নিয়ে ব্যক্তি জীবন ছুটছিল কর্ম জীবনের সঙ্গে। কিন্তু নিখিলবঙ্গ সাহিত্য সন্মেলনের সঙ্গ পাওয়ার পর কেমন যেন হাতের আঙুল এগিয়ে এল কিছু লিখতে-বলতে। তখন থেকেই লেখার শুরু, যতটুকু পারি মনের ভাব প্রকাশ করি। এখন অবসরে অবশ্যই লিখছি। সার্থকতা সেখানেই যেখানে আমার লেখায় আনন্দ উপভোগ করবেন পাঠকবৃন্দ। সেই দিনটির কথা আমার মনে আছে, যেদিন কর্মজীবন থেকে অবসর নেওয়ার সময় নিখিল বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলন আমাকে সম্মান জানিয়েছিলেন। এখন যুক্ত হয়েছি নবতরু ই-পত্রিকার সঙ্গে। আশা করব নবতরু ই-পত্রিকার উত্তরোত্তর শ্রীবৃদ্ধি হোক।"

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Nabataru-e-Patrika-July-2022-16.jpg July 1, 2022
অণু গল্প

ভালোবাসা: বসন্ত ঘোষ

    আমি তিনবার জেনেছি। এক, মায়ের কোলে। দুই, পরীক্ষায় প্রথম পাশ করে;আর তি

    বিশদে পড়তে এখানে ক্লিক করুন
    Nabataru-e-Patrika-June-2022-13.jpg
    অণু গল্প

    জবাব: নির্মল কুমার দে

      শখ করে বন্ধু রজতের মোটরসাইকেলটি একবার চালিয়েছিল সঞ্জয়। আর গাড়িটা একটি বাচ্চাকে বাঁচাতে গিয়ে উলটে গিয়েছিল রাস্তায়।

      বিশদে পড়তে এখানে ক্লিক করুন
      অণু গল্প

      পারিজাতের গল্প: নবজ্যোতি দাস

        রাস্তার পাশে বাঁ দিকের চায়ের দোকানে চা খেয়ে, বাঁ পকেট থেকে মিডিয়াম স্ট্যান্ডার্ডের গোল্ড ফ্লেকের প্যাকেট থেকে একটা সিগারেট বের করে ধরালো, লাঞ্চব্রেক, রিং হল না।

        বিশদে পড়তে এখানে ক্লিক করুন