সত্যং বদ: নিমাই চন্দ্র মণ্ডল
একটি ছেলে স্কুলের মেন গেটের ওপরে উঠেছে। নিচে আরও তিনজন দাঁড়িয়ে আছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহাশয় হোস্টেলের ছাদে পায়চারি করছেন। তিনি লক্ষ্য করলেন ছেলেটি স্কুলের ভিতরে ঢুকে একে একে বইয়ের ব্যাগগুলো নিয়ে ভিতরে যাচ্ছে। এই ভাবে চারজনের বইগুলো রেখে আবার গেটের মাথার ওপর উঠে বাইরে বেরিয়ে এল। প্রধান শিক্ষক মহাশয় চিন্তা করতে লাগলেন। কিন্তু কাউকে কিছু বললেন না। পরের দিনও ওই একই সময়ে ওই চারজন এসে অনুরূপ ভাবে বই বেঞ্চিতে রেখে আসছিল। তৃতীয় দিনে প্রধান শিক্ষক মহাশয় নিচে নেমে এলেন। যে ছেলেটি গেটের মাথার উপর উঠেছিল তাকে ডেকে নামালেন। বাকি নিচের তিনজন প্রধান শিক্ষককে দেখেই ছুট দিল।

গেটের ভিতরের ছেলেটিকে আর গেটের মাথা পেরিয়ে বাইরে আসতে হল না। প্রধান শিক্ষক মহাশয় গেটের তালা খুলে দিলেন। ছেলেটি অপরাধীর মতো চুপ করে দাঁড়িয়ে না-থেকে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে বলল, “স্যার, তিন মাইল দূর থেকে জল কাদা ভেঙে স্কুলে আসতে হয়। কোনওদিন প্রথম বেঞ্চিতে বসতে পাই না। এখানকার ছেলেরা সব জায়গা দখল করে বসে। সে জন্য আমরা ভোরে উঠে চারজনে এই গেট পেরিয়ে বই রেখে বেরিয়ে আসি।”
প্রধান শিক্ষক মহাশয় কোনও প্রশ্ন করলেন না। তার স্বীকারোক্তির সত্য-মিথ্যা যাচাই করলেন না। বললেন, “কাল থেকে এসে উপরে উঠে আমার কাছে চাবি নিয়ে, এসে গেট খুলে বই রেখে আমাকে আবার চাবি দিয়ে আসবে।”
One thought on “সত্যং বদ: নিমাই চন্দ্র মণ্ডল”