একটু জ্ঞান হতেই মুক্ত গ্রাম্য প্রকৃতির কোলে শৈশবের অনাবিল আনন্দধারায় ভাসতে শুরু করেছে জীবন। নব্বই-এর দশকের সেই দুরন্ত শৈশবের কথা অত্যাধুনিক প্রযুক্তি আকৃষ্ট আত্মমুখী গৃহবন্দী প্রজন্ম কিছুই জানলো না! গৃহকোণ বিলাসী প্রজন্ম জানতেই পারল না ভরপুর গ্রীষ্মের খরতাপে জর্জরিত ধরণীতলে এক দামাল শৈশবের রাজত্বের কথা! অভিভাবকের কড়া প্রহরা উপেক্ষা করে প্রতিবেশীর আমগাছে সদ্যোজাত আমের বংশ ধ্বংস করার মতো দুঃসাহসিক অভিযানের কথা কেই বা জানতে চায়? হাতের মুঠোয় আজ সব আনন্দ! আম চুরি করে ধরা পড়ার পর পৃষ্ঠ দেশের করুণ ইতিহাসের কথা মনের গভীরে অক্ষত থাকলেও আজও মানব জাতির ইতিহাসে তা চির উপেক্ষিতই থেকে গেলো! এভাবে কতো গ্রীষ্মের দুপুর আম বাগান, বাঁশবন, পানা পুকুর, পোড়ো মন্দিরের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে সে শুধু মনই জানে!
কোনো এক গ্রীষ্মের দুপুরে হঠাৎ করে কোনো এক অধমকে খুঁজে না পাওয়া গেলে সম্ভাব্য ছেলেধরার তত্ত্ব প্রবল হবার মুখে জানা গেলো সে ছেলে নাকি মুরগির পিছনে তাড়া করতে করতে গ্রামের শেষ ভাগে জঙ্গলের দিকে চলে গেছে। পড়ন্ত বিকালে সেই ছেলেকেই দেখা গেলো গ্রামের কোনো বড় মানুষের হাত ধরে বাড়ি ফিরছে।
গ্রীষ্মের প্রখর দহন উপেক্ষা করে বনে বাদাড়ে হারিয়ে যাওয়া সেইসব আড়ম্বরহীন অনাবিল আনন্দ সম্পদ ভাগ্যিস মনের গভীরে সঞ্চিত ছিল! শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রুদ্ধদ্বার শৈশব কী জানে গ্রীষ্মের উত্তাপ?
সাহিত্য চর্চার শুরু যাঁর বিশ্বভারতী(শান্তিনিকেতন)-র পাঠভবনে সাহিত্যসভার হাত ধরে সেই সরোজ চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৮৩ সালে অধুনা পশ্চিম বর্ধমান জেলার বনকাটি গ্রামে। ছাত্রাবস্থার সাহিত্য চর্চার ধারা আজও তাঁর মধ্যে অব্যাহত। ছড়া এবং কবিতায় তাঁর অবাধ বিচরণ। ছাত্রাবস্থাতেই লিখে ফেলেছিলেন বেশ কিছু নাটক; তার মধ্যে স্বনির্দেশনায় ছাত্রাবাসের আবাসিকদের নিয়ে মঞ্চস্থ করা হয়েছিল কিছু।
ইংরাজী সাহিত্যের ছাত্র শ্রীচট্টোপাধ্যায় বর্তমানে শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত। তাঁর কথায়, "কলমজাত সাহিত্যসৃষ্টি আমার পেশা নয়, তবে নেশা অবশ্যই। আজও তাই সাহিত্যের ছাত্র হিসাবেই পরিচিত হতে বেশি ভালো লাগে।"
এইরকম এক প্রচার বিমুখ সাহিত্যিক কলম ধরেছেন নবতরু ই-পত্রিকায়।
আমার শৈশব ভাড়াবাড়িতে। তাই গরমের ছুটিতে কাকু, জেঠুদের বাড়ি টানা একমাস ছুটি কাটাতে যেতাম। মামাবাড়িও যেতাম। ছেলেবেলার গরমকাল জুড়ে বেশ কিছু মজার স্মৃতি আছে