শীত বুড়ির চাদর পেড়িয়ে যখন গ্রীষ্মকাল আসে দাবদাহ যেন ভৈরব সন্ন্যাসীর মতন তাড়া করে। আমাদের ছোটবেলায় মুঠোফোন অনেক দূরের ব্যাপার লোডশেডিং এর পাড়ায় কার্টুন দেখাও ছিল শক্ত কাজ। আমতলায় দাদা দিদিদের সাথে আড্ডা ঝিরঝিরে বাতাস আর মশার কামড়ে গান শোনাই একটা অভ্যাস ছিল; আর যাদের অঙ্কের দূর্বলতা ছিল তাদের দুপুরবেলাগুলো অঙ্কের খাতা নিয়ে বসলেও আমার মতন মেলা মেলা মেলা খেলতে খেলতে সময় বয়ে যেত। আমমাখা নিয়ে যখন জমিয়ে বসতাম জগুমামার ভূতের গল্পরা ভয় ধরিয়ে দিত। সব গল্প বিশ্বাসযোগ্য ছিল না কিন্তু শিরশিরানি বা ভয় ধরানো ভাবটা আবার গল্প শোনবার আগ্রহ তৈরি করত।
কোনও কোনও বার গরমের ছুটিতে দার্জিলিং দার্জিলিং মন হত। ট্রেনে ওঠার রোমাঞ্চ। অ্যাডভেঞ্চার করে ফেরার রোমাঞ্চ গরমকাল পেড়িয়ে যেত। লোডশেডিং এর ঘর্মাক্ত দিনগুলোতে বড়দের প্রশ্ন করে উৎপাত করাও ছিল রুটিন বাঁধা কাজ। আর সেই প্রশ্ন থেকে নিষ্কৃতি পেতে কখনও তারা নানা পদে আমাদের রসনা তৃপ্ত করতেন কখনও নগর পারের রূপনগরের কথকতায় নিয়ে যেতেন। তারপর ঠিকসময়ে পৌঁছে যেতাম ঘুমের দেশে।
আমার শৈশব ভাড়াবাড়িতে। তাই গরমের ছুটিতে কাকু, জেঠুদের বাড়ি টানা একমাস ছুটি কাটাতে যেতাম। মামাবাড়িও যেতাম। ছেলেবেলার গরমকাল জুড়ে বেশ কিছু মজার স্মৃতি আছে