—এত ছবি আঁকিস বাবু, ইকবার আমার একটা ছবি করিস
—তোর ছবি!
— হঁ বাবু, যে শরীর তুকে শান্তির ঘুম দেয়, একটা ছবি থাকবেনি তার! কুতোওও ছবি তুর আঁকা, বিকোয় দেশ বিদেশ, একটা লয় ইখানেই থাইকবে, মাটির ঘরে
ভেষজ রং আর প্রকৃতির সন্ধানে ঘুরতে ঘুরতে বাউণ্ডুলে চিত্রকর শোভন পৌঁছে গেছিল আদিবাসী অধ্যুষিত এক অখ্যাত গ্রামে। না, এ গ্রাম তাকে নিরাশ করেনি। রং রূপ সৌন্দর্য দু-হাত ভরে দিয়েছে। সেই রূপের সুরায় চুমুক দিয়ে তার শিল্পী স্বত্তা এঁকে গেছে একের পর এক ছবি। তুলিতে জীবন্ত হয়ে প্রকৃতি শহরের প্রদর্শনশালায়। সমঝদার মানুষের বসার, শোবার ঘরে সসম্মানে শোভিত।

কিন্তু শোভনের মনে কিছুদিন ধরে কাঁটার মতো বিঁধে আছে আদিবাসী রমণী বিন্দির কথাগুলো। যার শরীরের আবেদনে সাড়া দিয়ে আর ফেরা হয়নি তার গুরুর আশ্রমে।
আজ তাই গাছ, ফুল, মাছ, হরিণের সঙ্গে মিলিয়ে সে এঁকেছে বিন্দিকে, তার শকুন্তলাকে, যার নগ্ন শরীরের উদ্দাম উন্মাদনায় বিভোর থেকেছে সে দুষ্মন্তের মতো, আজ তুলিতে রং লাগিয়ে ঢেকে দিচ্ছে তাকে জাফরানী আবরণে। নিরাবরণ শরীর লজ্জাবস্ত্রে আবৃত। দেড় বছরের শিশুকন্যাকে পিঠে আঁচল বেঁধে নিয়ে জল আনতে যেত যখন বিন্দি, পাতলা ছেঁড়া শাড়ি ভেদ করে তার শরীরের প্রতিটি উন্মুক্ত ভাঁজ তার চোখের সামনে, কি ভয়ংকর আকর্ষণ!
আজ পাকা শিল্পীর তুলি প্রকৃত শিল্প করে সাজিয়ে তুলল ভালোবাসার দেহমন্দিরকে, এ ছবি তার প্রেয়সী মানসীর, তার কাছেই থাকবে চিরকাল। প্রতিদিন বাঁচার আনন্দ যাকে ঘিরে।
বিন্দি আনন্দে টলমল….