ব্যর্থতায় সফলতা: পিনাকী সরকার
ব্যর্থতায় সফলতা কথাটি শুনলে হয়তো অবাক লাগারই কথা। অনেকেই মনে করবেন যে ব্যর্থতা মানেই তো সব শেষ যা আমাদের সাফল্যে পৌঁছাতে দেয় না তা থেকে আবার কীভাবে সফলতা অর্জন করব। সত্যি কথা বলতে আপনি যদি অন্তর্নিহিত অর্থ দিয়ে ভাবেন তাহলে বুঝতে পারবেন যে ব্যর্থতার মধ্যে সুপ্ত এক সফলতার বীজ রোপিত আছে। ব্যর্থতা মানে কখনই হেরে যাওয়া নয়। ব্যর্থতা মানে কখনই পরাজিত নয়। ব্যর্থতা মানে কখনই নিঃশেষ হয়ে যাওয়া নয়।
ব্যর্থতা মানে হল আপনার কাজের ভুল সংশোধনের একটা সুযোগ। ব্যর্থতা মানে হলো অতীত থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে ভবিষ্যতে জয়ের পথকে উন্মোচন করা। ব্যর্থতা মানে হল নিজের ভাবনা চিন্তার ভুলগুলো সংশোধন করে নির্ভুল করা; তাই আপনি যত বার ব্যর্থ হবেন ততবারই এই কথাটি মনকে বলবেন যে আপনার কাজের অনেক ভুল ছিল সেইগুলো সংশোধন করার সুযোগ পাওয়া গেল যা আপনাকে সফলতার দোরগোড়ায় পৌঁছে দেবে। যখন আপনি আপনার সফলতার নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে যাবেন তখন মনে করবেন যে আপনার কাজের ভুলগুলি কিছু সংশোধন করতে পেরেছেন বলেই আপনি এই সর্বোচ্চ স্থানে পৌঁছতে পেরেছেন। তবে যদি আপনি ব্যর্থ হওয়ার পর কেন ব্যর্থ হয়েছেন সেটা চিহ্নিত না-করে পরের সমালোচনায় সরব হয়ে থাকেন তাহলে আপনি কখনই সফলতার সর্বোচ্চ স্থানে পৌঁছতে পারবেন না। আর যারা আপনার কাজের সমালোচনা করবে আপনি তাদের কাছে থেকেও একটা বিশেষ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবেন। সমালোচকরা তাদের সমালোচনার মাধ্যমে আপনার কাজের অতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভুলগুলি ধরিয়ে দেবে যা আপনি আপনার চোখ দিয়ে কখনই দেখতে পাবেন না। আর সেই সব ছোটো ছোটো ভুল সংশোধনের মাধ্যমে আপনি পরবর্তীতে আপনার কর্মকাণ্ডকে সম্পূর্ণ নির্ভুলে পরিণত করতে পারবেন।
ক্রিকেট খেলায় যে দল হেরে যায় তারা কিন্তু খেলার শেষে প্রেস কনফারেন্সে এসে নিজেদের ব্যর্থতার দিকটি স্বীকার করে নেয় এবং পরবর্তীতে তারা তা সংশোধন করে নেয়। তেমন আমরাও যদি আমাদের কাজের ভুলগুলি লুকিয়ে না-রেখে তা স্বীকার করে সংশোধন করে নিই তাহলে আমারা আমাদের দ্রুত নির্দিষ্ট লক্ষ্য গন্তব্যে পৌঁছাতে পারব। আর যদি তা সংশোধন না-করি তাহলে সারাজীবন ফেলিওর হয়ে যেতে হবে।
সব শেষে বলি, সফলতার পথটি কখনই সমতল নয় বরং এটি একটি অমসৃণ পাহাড়ি পথের মতো। এই সফলতার পথ পরিবহনে অনেকবার ব্যর্থ হলেও হতে পারেন। তাই যে বা যারা এই ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে, নিজের ভুলকে সংশোধন করে, অপরিসীম মনবল মনশক্তি এবং হার না-মানা মানসিকতা নিয়ে যাত্রা শুরু করে, তারাই সফলতার এই দুর্গম পাহাড়ি পথকে অতিক্রম করে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছতে পারে। আর যারা মাঝ পথে বিদায় নেয় তাদের সারা জীবন ওই মাঝপথেই বসে থাকতে হয়।