একটা বেওয়ারিশ লাশ
যেটা এইমাত্র দাহ করা হলো শ্মশানে
অথবা
কবর দেওয়া হলো কবরখানায়।
নিশ্চয় একটা নাম ছিল মানুষটার
হয়তো রাম কিংবা রহিম বা অন্যকিছু।
কিন্তু সঠিকভাবে সেটা কে
এটা কেউ জানল না জানবেও না কোনওদিন।
লাশ হবার পর নির্দিষ্ট এলাকার প্রশাসন
কী করল তারা?
থানার থেকে থানা, হেড অফিস
ম্যাসেজ গেল, ছবি গেল ইত্যাদি ইত্যাদি।
সেগুলো কেউ দেখল, অধস্তনদের
জিজ্ঞাসাবাদ করল,
কেউ কেউ পাশ কাটিয়ে চলে গেল
অন্য কোন গুরুত্বপূর্ণ সংবাদে।
"নাম গোত্রহীন একটা লাশ সেটা নিয়ে -
অত মাথা ব্যথার আছেই বা কী?"
হয়তো কোনও নিভৃত কোনে তার অন্ধ মা
অথবা
সহায় সম্বলহীন স্ত্রী কিংবা বাবা
বা অবোধ এক দুটো শিশু
অন্তহীন আশা নিয়ে বেঁচে থাকল
মানুষটা একদিন না একদিন আসবেই।
এরকম কত মানুষ প্রত্যহ নিরুদ্দেশ হয়
এরকম কত মানুষ প্রত্যহ খুন হয়
মানুষের হাতে যন্ত্রযানের হাতে
এরকম কত আশা বেঁচে থেকে যায়
কেবল
লাশগুলো বেওয়ারিশ থেকে বিস্মৃত হয়ে যায়।
প্রতিদিন কত উদ্ভিদ হত্যা করি আমরা
প্রতিদিন কত প্রাণী হত্যা করি আমরা
প্রতিদিন প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে
কত মানুষ হত্যা করি আমরা
শুধু
উদ্ভিদ আর প্রাণীগুলোর মতো
কিছু কিছু নামওয়ালা মানুষও
বেওয়ারিশ লাশ বনে যায়।
নবতরু ই-পত্রিকার সম্পাদক বরুণ মুখোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৮৪ সালে। বীরভূম জেলার নানুর থানার শ্রীকৃষ্ণপুরের গ্রামের বাড়িতেই বড়ো হয়ে ওঠেন। আবাসিক ছাত্র হিসাবে বিদ্যালয় জীবন অতিবাহিত করেন বিশ্বভারতীর পাঠভবন ও উত্তর শিক্ষা সদনে। বাংলা সাহিত্যে স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ বরুণ মুখোপাধ্যায় বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত আছেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি ভালোবাসেন লেখালেখি করতে। এছাড়াও সাংস্কৃতিক চর্চা ও সৃজনশীল কাজকর্মের মধ্যে নিজেকে সর্বদা যুক্ত রাখেন। নতুন ছেলেমেয়েদের মধ্যে সাহিত্য সৃষ্টির উন্মেষ ঘটানোর জন্যই দায়িত্ব নিয়েছেন নবতরু ই-পত্রিকা সম্পাদনার।
এতো আজকের পৃথিবীর নামতা।
উল্কা তারাও মহাকাশে নাম লেখায়
বেওয়ারিশ হবার জন্য ,
কেউ পৃথিবীর গা ঘেঁষে বেরিয়ে যায়
অথবা সৃষ্টি করে খানা খন্দ ।