Recent Post

বিষয় আশয়: বিশ্বজিৎ রায় চৌধুরী

বিষয় আশয়: বিশ্বজিৎ রায় চৌধুরী

যখন গ্রামীন সমবায় সমিতির চাকরি পেলেন তখন বয়েস বেশি হয়নি। বিশ বাইশের জোয়ান ছোকরা। গ্রাজুয়েট হয়েছেন সদ্য। বিএ পাশ ছেলে বলে কথা। উজ্জ্বল ভবিষ্যতের শুরু হল সমবায় সমিতির অ্যাকাউন্টস্ ক্লার্ক দিয়ে। 

মাইনে বেশি ছিল না। তবে লোকে মান্যগণ্য ভাবত। ভদ্র জীবন যাপনে লুদ্ধ হল মেয়েটি। 

ওর বাবা কায়ক্লেশে সংসার চালাতেন। দরিদ্র অথচ সৎ। প্রাচুর্যের স্বাদ না পাওয়া জীবন সাদামাটা এবং সরলতায় কাটানো সাদা মনে কাদা নেই টাইপের হয়। 

কেমন একধরনের নিরালম্ব জীবনযাত্রায় আদর ভালোবাসা মেশানো নিখাদ সোনা। কি এক ভাললাগা যে মিশে থাকে যা পায়ে ঠেলা যায় না। 

এরকম ফ্যামিলির মেয়ে সমবায় সমিতির অ্যাকাউন্টস্ ক্লার্ক পেলে আবার লুফে নেবে না?

ক’টা দিন দু’জনায় প্রেম পীড়িতির অজানা সাগরে দুরন্ত ঢেউয়ে দামাল সাঁতরে, অবশেষে বিয়ের পিঁড়িতে বসে পড়ল।

সমবায় সমিতির অ্যাকাউন্টস্ ক্লার্ক প্রমোশনের গ্রেড চেঞ্জ করতে করতে এখন সে থুড়ি তিনি জেনারেল ম্যানেজার। মানে কর্তার কর্তা—সর্বময় কর্তা। আবার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। 

সংসারে অভাব নেই। মেয়েটির সংসারে ছেলে ও মেয়ে দু’ই-ই আছে। গৃহকর্তা হোমড়া চোমরা বা এলাকায় কেওকেটা পার্শোনালিটি ।

যথারীতি মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। ছেলে জোয়ান। ছেলে একদিন ইয়ার দোস্ত নিয়ে পৌঢ় বাবার কাছে দরবার করল।

“বাবা আমি একটা মেয়েকে ভালবাসি। ও-ও আমাকে প্রাণপণ ভালবাসে। “

ইয়ার দোস্তরা বলল, “এই উইলে আপনার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি সব লিখে দেবার অঙ্গীকার করে সই করে দিন। নাহলে আপনার বউমা দর্শন যেমন কপালে নেই তেমনি নাতি নাতনির মুখ দেখাও এ-জীবনে আর কখনো হবে না। “

“নিন, সই করুন প্লিজ।”

সমবায় সমিতির অ্যাকাউন্টস্ ক্লার্ক অনেক কষ্টে সভাপতি হয়ে সাদামাটা জীবনটাকে গ্ল্যামারাস্ করেছিলেন। দস্তখত করলেন উইলে।  পিতৃধন পুত্রধনে রূপান্তরিত হবার পর জ্বলজ্বল করতে লাগলো তাঁর সই করা নামটি ‘সদাশয় ভরদ্বাজ’।

এই নামটি এতকাল জীবনভর সমুজ্জ্বল ছিল অফিসে এবং সংসারে। সঙ্গ দিয়েছিল স্ত্রী সঙ্গীতাকে। আজ সেই নামটি সর্বস্ব দিয়ে পুত্র সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করল বিনা বাক্যব্যয়ে।

Author

  • Barun@Mukherjee

    নবতরু ই-পত্রিকার সম্পাদক বরুণ মুখোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৮৪ সালে। বীরভূম জেলার নানুর থানার শ্রীকৃষ্ণপুরের গ্রামের বাড়িতেই বড়ো হয়ে ওঠেন। আবাসিক ছাত্র হিসাবে বিদ্যালয় জীবন অতিবাহিত করেন বিশ্বভারতীর পাঠভবন ও উত্তর শিক্ষা সদনে। বাংলা সাহিত্যে স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ বরুণ মুখোপাধ্যায় বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত আছেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি ভালোবাসেন লেখালেখি করতে। এছাড়াও সাংস্কৃতিক চর্চা ও সৃজনশীল কাজকর্মের মধ্যে নিজেকে সর্বদা যুক্ত রাখেন। নতুন ছেলেমেয়েদের মধ্যে সাহিত্য সৃষ্টির উন্মেষ ঘটানোর জন্যই দায়িত্ব নিয়েছেন নবতরু ই-পত্রিকা সম্পাদনার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Nabataru-e-Patrika-July-2022-16.jpg July 1, 2022
অণু গল্প

ভালোবাসা: বসন্ত ঘোষ

    আমি তিনবার জেনেছি। এক, মায়ের কোলে। দুই, পরীক্ষায় প্রথম পাশ করে;আর তি

    বিশদে পড়তে এখানে ক্লিক করুন
    অণু গল্প

    পারিজাতের গল্প: নবজ্যোতি দাস

      রাস্তার পাশে বাঁ দিকের চায়ের দোকানে চা খেয়ে, বাঁ পকেট থেকে মিডিয়াম স্ট্যান্ডার্ডের গোল্ড ফ্লেকের প্যাকেট থেকে একটা সিগারেট বের করে ধরালো, লাঞ্চব্রেক, রিং হল না।

      বিশদে পড়তে এখানে ক্লিক করুন
      Nabataru-e-Patrika-June-2022-13.jpg
      অণু গল্প

      জবাব: নির্মল কুমার দে

        শখ করে বন্ধু রজতের মোটরসাইকেলটি একবার চালিয়েছিল সঞ্জয়। আর গাড়িটা একটি বাচ্চাকে বাঁচাতে গিয়ে উলটে গিয়েছিল রাস্তায়।

        বিশদে পড়তে এখানে ক্লিক করুন