Recent Post

বন্ধুত্ব:  অদ্রিজা মুখোপাধ্যায়

অনেকদিন আগে একটা গ্রামে এক ছেলে থাকত, তার নাম পটল। গ্রামের মানুষজন তাকে পটলা বলে রাগাত। কিন্তু পটল রাগত না। পটলের এক বন্ধু ছিল যার নাম কাজল। এক বিকেলবেলায় পটল কাজলের বাড়ি গেল। সে দেখল কাজল বাড়িতে নেই। সেখানে কাজলের মা টিভি দেখছিলেন। পটল তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, “কাজল কোথায়?”

কাজলের মা বললেন, “কাজল সিমলা বেড়াতে গেছে।” এবং তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কেন এসেছ?”

পটল বলল আমাকে সবাই পটলা বলে রাগায়, তাই আমি একটা বুদ্ধি নেব বলে এসেছিলাম। কিন্তু কাজল তো সিমলা বেড়াতে গেছে তাই আর বুদ্ধি নেওয়া হল না। “বন্ধুকে না পেয়ে পটল মনের দুঃখে বাড়ি চলে গেল।

কিছুদিন পর কাজল বাড়ি ফিরে এল। তার কিছুদিন পর পটলের বাড়িতে ভোজ ছিল,  পটল খেয়ে দেয়ে ঘুমোচ্ছিল। তখন কাজল এল ভোজ খেতে। কাজলকে দেখে কাজের মাসিরা পটলকে জোরে ডাকল। বলল, “তোর বন্ধু কাজল এসেছে।”

একথা শুনে পটল আনন্দে নেমে এল। 

“আমি কিছুদিন আগেই তোর বাড়ি গিয়েছিলাম, তোর কাছে একটা বুদ্ধি নেব বলে, তুই তো বেড়াতে গিয়েছিলিস তাই তোকে না পেয়ে মনের দুঃখে বাড়ি ফিরে গেলাম।” পটল বলল।

পটলের মাথায় দারুণ বুদ্ধি খেলে গেল। কাজল পটলের কানে কানে কিছু একটা বলল। 

পটল বলল, “দারুণ বুদ্ধি তোর!”

Nabataru-e-Patrika-July-2022-17.jpg July 1, 2022

এরপর একদিন বিকালে কাজল বলল, “চল পটল, অনেকদিন বাদাম ভাজা খাইনি, আজকে বাদাম ভাজা খাব।”

পটল বলল, “চল।”

এরপর দু’জন মিলে রাস্তায় গেল। তখন বাজে বিকাল পাঁচটা। ওরা যখন বাদাম ভাজা কিনছিল তখন ওদের বন্ধুরা মাঠে ব্যাট নিয়ে খেলতে যাচ্ছিল। সেটা দেখে কাজল বলল, “চল, বাদাম ভাজা নিয়েই মাঠে যাই।”

মাঠে গিয়ে ওরা বাদাম ভাজা খেতে লাগল, সেটা দেখে একজন এগিয়ে এসে বলল, “কী পটলা, কী খাচ্ছিস রে?”

একথা শুনে কাজল রেগে গিয়ে বলল, “তোর নাম তো পাঁচু, আমি যদি তোকে প্যাঁচা বলি তাহলে কেমন হবে?”

একথা শুনে বাকি ছেলেরাও হাসল এবং ভাবল ওরা যদি পটলকে পটলা বলে তাহলে ওদের নামও বদলে যাবে। ওরা আর কোনোদিনও পটলেকে পটলা বলেনি। এরপর পটল কাজলকে থ্যাঙ্ক ইউ বলল। তারা সবাই মিলে বন্ধু হয়ে গেল। বাকিরাও নিজের ভুল বুঝতে পারল। তারপর সবাই মিলে পটলের কাছে ক্ষমা চাইল। পটলও সবাইকে ক্ষমা করে দিল এবং সবাই মিলে বলল, “পটল, আমরা এই ভুল আর কোনোদিনও করব না। 

পটল হেসে উত্তর দিল, “ইটস ওকে মাই ফ্রেন্ডস।”

Author

  • অদ্রিজা মুখোপাধ্যায়

    ২০১৫ সালে পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটের কানাইডাঙা গ্রামে তাঁর মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন অদ্রিজা। এরপর বীরভূম জেলার নানুর থানার শ্রীকৃষ্ণপুরের বাড়িতে তাঁর শৈশব জীবন শুরু হয়। গ্রামের মেঠো সোনারোদ মেখে প্রকৃতি থেকে সহজপাঠের ক্লাস শুরু সেখানেই। বর্তমানে বোলপুরে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষারম্ভ হয়েছে তাঁর। এই প্রজন্মের আর পাঁচটা শিশুর মতোই গল্প পড়ার থেকে গল্পের ভিডিওতেই বেশি মগ্ন অদ্রিজা; আর সেটাই তাঁর গল্পের রসদ বলা যেতে পারে। পড়াশোনার পাশাপাশি ভালোবাসেন ছবি আঁকতে। নৃত্যেও বিশেষ আগ্রহ আছে তাঁর। তাঁর মুখে মুখে তৈরি 'গান-ছড়া' বড়োদেরও ভালোলাগে। নবতরু ই-পত্রিকায় গল্প লিখে নিজেও বেশ খুশি শিশু অদ্রিজা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

গ্রাম্য বধূ: তৃষিতা ঘটক
বিবিধ কচিপাতা ছবি / ফটোগ্রাফি

গ্রাম্য বধূ: তৃষিতা ঘটক

    গ্রাম্য বধূ: তৃষিতা ঘটক(পঞ্চম শ্রেণি); শ্রীখণ্ড ঊষাঙ্গিনী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়; পূর্ব বর্ধমান

    বিশদে পড়তে এখানে ক্লিক করুন
    Nabataru-e-Patrika-2023-11.jpg
    কচিপাতা স্মৃতিকথা

    আমার সকাল: অহনা মুখোপাধ্যায়

      আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি চারিদিক কুয়াশার চাদরে সাদা হয়ে গেছে। সকালে স্কুলে যেতে খুব কষ্ট হচ্ছিল। মা বলে “সনু আজকের দিনটা স্কুলে যাও, গাড়িতে যাবে মজা হবে।” বাবা বলল, “নিচে গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে।”

      বিশদে পড়তে এখানে ক্লিক করুন
      কচিপাতা

      কাণ্ড কারখানা: তমোজিৎ মণ্ডল

        একদিন এক চোর একটি বাড়িতে চুরি করতে গেল। সেই বাড়িতে একটি কুকুর ছিল। কুকুরটা ঘেউ, ঘেউ করে ডাকতে লাগল। মালকিন শুনতে পেল কুকুরের ডাক। মালকিন অবাক হল।

        বিশদে পড়তে এখানে ক্লিক করুন