দেখতে যেমন বোকা বোকা, কথাবার্তায়ও তেমন বোকা বোকা। কাজে-কর্মের ধরণ-ধারণেও বোকামি বোকামি ভাব। চলন-বলনেও বোকা বোকা দেখতে লাগা মানুষটার নাম আক্কাস। সহজ-সরল আর আলাভোলা এই লোকটাকে নিয়ে আমরা যথেষ্ট মজা-মশকরা করি। যখন মন চায় তখনই তাকে ডেকে নিয়ে যেদিক সেদিক চলে যাই।
কিন্তু যেদিকেই যায় সেদিকেই আক্কাস টাকা কুড়িয়ে পায়। এই টাকা কুড়িয়ে পাওয়ার ভাগ্য তার ঈর্ষণীয়। কখনও দশ টাকা, কখনও পঞ্চাশ টাকা, কখনও বা একশত টাকাও সে কুড়িয়ে পায়। ব্যাপারটা আমাদের কাছে আর হালকা থাকল না। এত টাকা সে কুড়িয়ে পায় আর আমরা এক টাকাও কুড়িয়ে পাই না, এত মন্দভাগ্য আমাদের? আমরা তার কাছ থেকে বুদ্ধি নিলাম, কী করলে আমরা টাকা কুড়িয়ে পাবো। সে বলল, নদীর পাড়ে, পুকুর পাড়ে কি আর টাকা পড়ে থাকে? যেদিকে মানুষের আনাগোনা বেশি সেদিকে নিচের দিকে তাকিয়ে হাঁটতে হবে।

পরপর কয়েকদিন নিচের দিকে তাকিয়ে হেঁটেও টাকা পেলাম না। এবার সে আর এক বুদ্ধি দিল— খুব ভোরে বাজারে যাবি। টাকা পাওয়ার সম্ভাবনা তাতে বাড়বে।
তার কথা মতো ভোরে ভোরে বাজার যাই, টাকা কুড়িয়ে আর পাই না।
নিজেদেরকে দুর্ভাগ্যবান মনে হয়, আর সৌভাগ্যবান আক্কাসের কুড়িয়ে পাওয়া টাকায় বিকাল-সন্ধ্যা নাস্তা করি৷ এত টাকা সে কী করে পায়, তাই তার সঙ্গে হাঁটি আর সতর্ক থাকি।
একদিন দেখি হঠাৎ পকেট থেকে পঞ্চাশ টাকার নোট বের করে একটু দূরে ছুড়ে দিল। তারপর কুড়িয়ে নিয়ে বলল, পেলাম পেলাম পঞ্চাশ টাকা পেলাম!
ঘটনাটি ধরে ফেলার পর নিজের খুব খারাপ লাগল৷ যাকে সারাক্ষণ বোকা বোকা বলি, সেই বোকা লোকটিই আমাদের প্রতিদিন বোকা বানিয়ে চলেছে, ধরতেও পারিনি।