রাস্তার পাশে বাঁ দিকের চায়ের দোকানে চা খেয়ে, বাঁ পকেট থেকে মিডিয়াম স্ট্যান্ডার্ডের গোল্ড ফ্লেকের প্যাকেট থেকে একটা সিগারেট বের করে ধরালো, লাঞ্চব্রেক, রিং হল না। পারিজাতের এই এক সমস্যা, রিং ভালো ছাড়তে পারে না, কিন্তু সেটার দিকে খেয়াল নেই তখন। ওর চোখ তখন ঠিক ৫০ ফুট দূরেই, মেয়েটি ওর দিকেই চেয়ে, ভ্যাপসা গরম লাগছে কি? ঘৃণায় মাথাটা দপ করে জ্বলে উঠতেই নিজেকে সামলে নিল, সিগারেটের বাকি টানগুলো ফিরতি পথে যেতে যেতেই দিল, ফিল্টারের টুকরোটা ফেলবে ঠিক এই সময় সামনে থেকে আরেকটা পরিচিত মুখ, বিশাল! “দাদা,কেমন আছো?”
তারপর প্রায় একটানে “সেই ঘটনার পর তো আমাদেরও ব্লক করে দিলে সব জায়গায়, বাকি সব চলছে? রাইড, মিউজ়িক, ফটোগ্রাফি এগুলো? আর অন্য জব করছ কিছু, না…. ”

কথা শেষ করতে না দিয়েই পারিজাত বলল, হ্যাঁ ভাই ভালো আছি, আর ওই চাকরিতেই আছি, তবে ট্রান্সফার হয়েছে, সামনেই অফিস আর আমি পুরনো সব কিছু ছেড়ে এসেছি, তাই সব ব্লকড্। আর হ্যাঁ আমার বাইক রাইড থেকে ফটোগ্রাফি, মিউজ়িক থেকে লেখালেখি, পেন্টিং সব নিয়েই বেশ আছি, কারণ এইগুলো নিয়েই একসময় অনেক খোঁচা শুনতে হয়েছিল, তাই এইসবগুলোতে বিশাল কিছু না হলেও কিছু পরিচিতি পেয়েছি আর এগুলো ভালোবেসেই করি, যেমনটা ঠিক ইঞ্জিনিয়ারিং, চ্যালেঞ্জ, প্যাশন, নেশা…
যেটাই বলবি আর সবরকম শিক্ষার দরকার হয়, পেয়েছি, তবে সোশ্যাল ওয়ার্কে এখনও আছি আর থাকব, যাই হোক ভালো থাকিস….বলেই সামনের অফিসের গেট দিয়ে সোজাঢুকে গেল।
বিশাল তাকিয়ে রইল পারিজাতদার দিকে যে অনেকটাই বদলে গেছে কিন্তু মানুষ হিসেবে নয়, কাঠিন্যতার দিক দিয়ে। উলটো দিকে রাস্তার ওপারে ঋষিতা। ওর নতুন বয়ফ্রেন্ড চা-সিগারেট খেতে ব্যস্ত। একসঙ্গেই তিনজনে মার্কেটিং-এ এসেছিলৃ ওর নজরটা বিশালের দিকে? না তারও পেছনে?…গেটের উপর লেখা ‘শক্তিস্থল পঞ্চায়েতে আপনাকে স্বাগত’।