দরজাটা খোলা থাক বন্ধ ঘরের,
আলো এসে ছুঁয়ে যাক মন্দ পারে।
সুগন্ধি বাতাস এসে ছুঁয়ে দিক মন,
আসুক নতুন প্রহর আজকে এখন,
অনেকটা ভালো এসে মুছে দিক কালো
নিভে যাক মৃত তাঁরা, বেঁচে থাক ভালো।
ফিরে ফিরে আসুক না শুধু শুভক্ষণ-
সুগন্ধি বাতাস এসে ছুঁয়ে দিক মন
আসুক নতুন প্রহর আজকে এখন-
মিলেমিশে ভালোবেসে বাঁচুক হাসি
দুঃখের নদীনালা হোক আজ বাসি
ঝরা ফুল উড়ে উড়ে পড়ুক খোঁপায়-
তন্বীর হাসি মিশে যাক যুবা গায়
পাশাপাশি এসো বাঁচি, হারবে মরণ-
সুগন্ধি বাতাস এসে ছুঁয়ে দিক মন
আসুক নতুন প্রহর আজকে এখন-
গান যদি প্রাণ হয়ে সুধা হয় কারো
বেঁচে থাক সেই গান সবদিকে আরও,
ভেদাভেদ রেষারেষি নয় শুভ কাজ
রক্তে তো নেই ভেদ, বুঝেছ কি আজ?
শোভা পায় না কিছু বিভেদ এমন-
সুগন্ধি বাতাস এসে ছুঁয়ে দিক মন
আসুক নতুন প্রহর আজকে এখন-
সবাই সবার তরে, হাতে হাত ধরে
এগিয়ে চলব মোরা ভুল ঠিক করে,
ভেঙে ফেলি সব বাধা, সুখ করি দান
মিলেমিশে ভালোবেসে হেসে গাই গান
আমরাই পারি সব করি চলো পণ-
সুগন্ধি বাতাস এসে ছুঁয়ে দিক মন
আসুক নতুন প্রহর আজকে এখন-
পূর্ব বর্ধমান জেলার গুসকরায় ১৯৮২ সালে জন্মগ্রহণ করেন লেখক নির্ঝর কুণ্ডু। তারপর বাঁকুড়া জেলার প্রত্যন্ত এক গ্রামে যৌথ পরিবারে বড় হয়ে উঠে বাবার কর্মসূত্রে দুর্গাপুরে আসেন তাঁরা। সেখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকেন। তিন ভাই-বোনের সঙ্গে বড় হয়ে ওঠা নির্ঝর কুণ্ডু ছোটবেলাতেই একবার সাম্প্রদায়িক বিবাদের খবর শুনে বিচলিত হন, আর তারই প্রতিফলন ঘটে স্কুল ম্যাগাজিনের পাতায়। তিনি ওই বয়সেই লিখে ফেললেন আট-দশ লাইন কবিতা-
"বিদ্বেষ মারামারি কোরোনাকো ভাই,
হিংসা বিবাদ করে কোনও লাভ নাই"...।
বিজ্ঞানের শিক্ষক সিদ্দিকী স্যার সেই যে আদর করে পিঠ চাপড়ে দিয়েছিলেন সেটা পরবর্তীতে লেখার ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণার সঞ্চার করেছিল বলে মনে করেন তিনি। তারপর স্কুলের অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে রাজ্যস্তরের বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক আসরে নির্ঝর কুণ্ডু তাঁর নিজস্বতার ছাপ রেখে যান কবিতা পাঠ, বিতর্ক সভা, তাৎক্ষণিক বক্তৃতার মাধ্যমে। এগুলির হাত ধরে আসে নানান সম্মাননাও। পরবর্তীতে কলেজ জীবন শুরু হয় গুসকরা মহাবিদ্যালয়ে। সংস্কৃতির পীঠস্থান মামারবাড়ি গুসকরায় কেটেছে তাঁর প্রায় চার বছর। শ্রদ্ধেয় কল্যাণ সেন বরাট মহাশয়ের হাত থেকে পাওয়া পুরস্কার তাঁর জীবনে অন্যতম বড় পাওনা।
পাশাপাশি বেশ কিছু স্থানীয় পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে তাঁর বিভিন্ন লেখালেখি। সোশ্যাল মিডিয়াতেও নিয়মিত সৃজনশীল লেখালেখি পাঠকদের ভালো লাগে। আগামী দিনে বই প্রকাশেরও ইচ্ছে আছে সাহিত্যিক নির্ঝর কুণ্ডুর।
বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পাশাপাশি সাহিত্যচর্চায় তাঁর আগ্রহের ছবিও চোখে পড়ে, তিনি ভালোবাসেন কবিতা আবৃত্তি করতে ও গান শুনতে। প্রকৃতির থেকে জ্ঞান লাভ করার মধ্যে যে শিক্ষা আছে তা অনুভব করেন তিনি। তাঁর কথায়, "অত্যন্ত সাদামাটা ভাবে মনের ভাব, আনন্দ, ভালোবাসা, দুঃখ-বেদনার অনুভূতিগুলিকে অন্যের মনে পৌঁছে দিতে আর নিজেকে বিশুদ্ধ চিন্তায় ব্যস্ত রাখতে সবসময় চেষ্টা করছি মাত্র।" এই কাজে চেনা অচেনা বহু গুণীজনের সান্নিধ্যে আসতে পেরে নিজেকে ধন্য বলে মনে করেন তিনি। এটাই তাঁর কাছে সম্মানের, এটাই চরম প্রাপ্তি।