গভীর রাতে পশ্চিম দিকের জঙ্গলে কিছু জিপ আসার আওয়াজে হঠাৎ বরেণ, রাজু, শংকরীদের ঘুম ভেঙে গেল। নিমেষে তারা কয়েকজন লাঠি, তির, বল্লম নিয়ে মশাল হাতে জঙ্গলে ছুটে গেল। বাবুরা সবেমাত্র একটি বড় গাছে কোপ মারার অপেক্ষায়। অমনি তারা তাদের সামনে হাজির। লাঠি, বল্লম উঁচিয়ে একবাক্যে বলে উঠল, “একটা গাছেও কোপ দিবি তো মারা পড়বি।” ততক্ষণে ওদিক থেকে আরও কিছু গ্রামবাসী এসে হাজির। ওদের দল ভারী বুঝে বাবু শাগরেদদের বললেন, “চল, চল, সব তাড়াতাড়ি গোটা, এক্ষুনি বেরিয়ে চল।”

পরদিন সকালে মাহালি গ্রামের বটতলায় মুখিয়া এসে উপস্থিত। তিনি বলে উঠলেন, “এই লড়াইটা চলতে থাকবে, এ বেঁচে থাকার লড়াই, শেষ দেখে ছাড়ব।” গ্রামবাসীরা তারস্বরে সম্মতি জানাল।
মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে আবারও এক গভীর রাতে আচমকা গ্রামে তীব্র হাহাকারে আকাশ-বাতাস মুখরিত। সবাই দিগবিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে ছুটে বেড়াচ্ছে। দাউদাউ করে আগুনের লেলিহান শিখা বাঁশ-কাঠের বাড়িগুলিকে গিলে খাচ্ছে। অনেককে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ভোরের আলো ফুটতে একের পর এক মৃতদেহের কালো কালো স্তূপ। বরেণ, রাজু, শংকরীসহ আরও অনেকে হয়তো আকাশের তারা হয়ে বলছে,”এ লড়াই তোরা কখনও হারিস না।”