উদিত সূর্যের দেশে
আজও ভাসে কান্নার ঘ্রাণ
কচি কচি পাতায় কচি কচি শিশু
গুণে রাখে অনার্য সময়।।
প্যারা মিলিটারিতে ছেয়ে যায় শহর
ভেজা ভেজা মরশুম
শব্দগুলো মরিচঝাঁপি
সব কথা কথা নয়
তবু কথায় সাজাই বিনিদ্র রাত।
একে একে সব কথা হয়ে ওঠে আত্মময়।।
হাতের ফোকরে ধরে রাখি মুহূর্ত
হাত থেকে খসে পড়ে নাঙা চেতন
অসবর্ণ ভাবনায় গড়ি অকারণ রোদের আকাশ।
বৃহন্নলা সংসার।।
আমার হৃদয়ে ফিরে আসে শব্দদানব
ছিঁড়ে খায় শিশু ও মানুষ
আমরা প্রতিদিন ইষ্টনাম জপ করি।
চোখে মাখি কবরের ঘুম।।
আজও দুপুরের রোদে ভাসে ভুখা মিছিল
হাজার বারুদের মহানন্দে বেজে ওঠে একটি করুণ ঢাক।।
কবি ও লেখক হামিদুল ইসলাম ১৯৫৫ সালে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ভোঁওর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর শৈশব কাটে চরম দারিদ্র্যের মধ্যে। পড়াশোনার জন্য আসেন মামার বাড়িতে, সেখান থেকে উচ্চ মাধ্যমিকের পড়াশোনা সম্পূর্ণ করে পুনরায় ফিরে আসেন নিজের বাড়িতে। এরপর বালুরঘাট কলেজ থেকে স্নাতক ও উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ও ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে ১৯৮৪ সালে শিক্ষক হিসাবে নিযুক্ত হন।
চোদ্দ বছর বয়সে তাঁর লেখা প্রথম কবিতা 'ভালোবাসা' প্রকাশিত হয় স্কুল-ম্যাগাজ়িনে। পরবর্তীতে কলেজ জীবনে বিভিন্ন সাহিত্য পত্র-পত্রিকার সঙ্গে পরিচয় হয়। তাঁর কথায়, "লেখা আমার নেশা; লেখা আমার জীবন।" লালন চাঁদ ছদ্মনামে তিনি লেখালেখি করেন। এ-যাবৎ তাঁর ন'টি একক কাব্যগ্রন্থ ও ত্রিশটিরও বেশি কাব্য সংকলন প্রকাশিত হয়েছে। 'সাহিত্য রত্ন' ও 'কবি সাগর' সম্মাননা-সহ পেয়েছেন একাধিক সম্মাননা ও পুরস্কার।