Recent Post

ছেলেবেলার পুজোর আনন্দ: মৃণাল কান্তি ভট্টাচার্য

ছেলেবেলার পুজোর আনন্দ: মৃণাল কান্তি ভট্টাচার্য

রথযাত্রায় শুরু হত কাঠামো তৈরির কাজ। কারিগর নয়, ঠাকুর গড়ার মিস্ত্রি এলেই পাড়ার কচিকাঁচার দল ভিড় জমাত ঠাকুর দালানে। বাঁশ, খড়, সুতলি ইত্যাদি উপকরণ হাতের কাছে পেয়ে চলত ছোটো-ছোটো ঠাকুর গড়ার পালা। তারপর ধাপে-ধাপে একমাটি, দু’মাটি, শেষে রঙের প্রলেপ। মিস্ত্রির একটু আধটু ফাই-ফরমাশ খেটে দিলে সবই ফ্রিতে মিলত। সাজের অবশিষ্টাংশ দিয়েই তৈরি হত কোঁচকানো চুলের বেণী, শাড়ির ভাঁজ, মুকুট, অস্ত্রশস্ত্র, মালা এমনকি বাহনও বাদ পড়ত না। শুধু চোখ আঁকার বেলায় মিস্ত্রির ছোঁয়া লাগত।

ষষ্ঠীর সকাল। প্রস্তুতি তুঙ্গে। আভিজাত্যে মোড়া কলোনির পুজোয় কয়েক লাখ টাকার বাজেট। প্যান্ডেল, আলো, প্রতিমা, খানা-পিনা, নাচা-গানা কিছুতেই খামতি নেই। সন্ধ্যায় সাজগোজ করে সবাই মেতে উঠবে দেবী আরাধনায়। হঠাৎ মিসেস ভট্টাচার্য-এর এক ফোনেই কলোনি শুদ্ধ সবাই কেমন নড়েচড়ে বসল। পুজোর প্রধান উদ্যোক্তা পরিমলবাবুকে সকাল থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। চারিদিকে কেমন হইচই পড়ে গেল।

টানা চার ঘণ্টা ধ’রে ফোন আর গাড়ির ব্যস্ততায় নাজেহাল হয়ে সবাই যখন মণ্ডপে ফিরে এল, ঠিক তখনই ঢাকির চোখ পড়ল প্যান্ডেলের পিছনে। কিছু একটা নড়ছে যেন! সন্তর্পণে সবাই ফাঁক গলে দেখল, পরিমলবাবু একটা ছোট্ট ঠাকুরের মূর্তিতে চক্ষুদান করছেন। আর পাশে বসে তাঁর ছেলে বুবুন কাদার তৈরি ত্রিশূল রাংতা কাগজে মোড়ার কাজ করছে। ঠাকুর গড়ার মিস্ত্রি হয়ে আজ বাবা তাঁর ছেলেকে ফিরিয়ে দিল সেই ছেলেবেলার পুজোর আনন্দ।

Author

  • মৃণালকান্তি ভট্টাচার্য

    অবিভক্ত বর্ধমান জেলায় বর্ধমান সদর শহরে ১৯৮১ সালে জন্ম হয় কবি, সাহিত্যিক ও সাংবাদিক মৃণালকান্তি ভট্টাচার্যের। পিতা—স্বর্গীয় বিশ্বম্ভর ভট্টাচার্য ও মাতা—চম্পা রানি ভট্টাচার্যের সন্তান মৃণালকান্তি ভট্টাচার্যের জীবনের প্রথম ১৫ বছর কেটেছে মাতুলালয় বর্ধমান শহরের সন্নিকটে রামচন্দ্রপুর গ্রামে(বুড়ার)। বুড়ার অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা ও পঞ্চপল্লী এমসি হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করে কাটোয়ার উপকন্ঠে অজয় নদী তীরবর্তী বিল্লেশ্বর হাইস্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপন হয়। তারপর বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী বিবিএ (অর্থনীতি) এবং ম্যাগনাস স্কুল অফ বিজনেস (কলকাতা) থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী এমবিএ (অর্থনীতি) শিক্ষার্জন করেন। বর্তমানে পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম থানার বেরুগ্রামে বসবাস করেন তিনি। খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তরের কর্মী শ্রীভট্টাচার্য এমবিএ (ফিন্যান্স) পড়াশোনা সমাপন্তে দিল্লি ও কলকাতায় বহুজাতিক সংস্থায় কর্মজীবন শুরু করে বর্তমানে কেতুগ্রাম-২ ব্লকে খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তরে কর্মরত। স্কুল জীবন থেকেই লেখালেখির জগতে প্রবেশ করে কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণ কাহিনি, প্রবন্ধ-সহ উত্তর সম্পাদকীয় প্রতিবেদন সমসাময়িক বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও দৈনিক সংবাদপত্রে নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হয়ে আসছে। বাংলা লিটল ম্যাগাজিনের তরফ থেকে পেয়েছেন সাহিত্য সম্মান, কবিরত্ন ও শারদ সম্মান। আনন্দবাজার পত্রিকা আয়োজিত "লেন্স বন্দী পুজোর আনন্দ-২০১৯" প্রতিযোগিতায় বর্ধমান জেলার "সেরা চিত্রগ্রাহক" সম্মান লাভ। ম্যাজিক বুক অফ রেকর্ড (দিল্লি)-এর বিচারে বাংলা সাহিত্য চর্চায় বিশেষ সম্মান স্বরূপ "বেস্ট অ্যাচিভার্স অ্যাওয়ার্ড(২০২১)" লাভ। কঠিন পরিস্থিতিতে উত্তরণের আলো খোঁজাই যেন তাঁর চ্যালেঞ্জ!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Nabataru-e-Patrika-July-2022-16.jpg July 1, 2022
অণু গল্প

ভালোবাসা: বসন্ত ঘোষ

    আমি তিনবার জেনেছি। এক, মায়ের কোলে। দুই, পরীক্ষায় প্রথম পাশ করে;আর তি

    বিশদে পড়তে এখানে ক্লিক করুন
    Nabataru-e-Patrika-June-2022-13.jpg
    অণু গল্প

    জবাব: নির্মল কুমার দে

      শখ করে বন্ধু রজতের মোটরসাইকেলটি একবার চালিয়েছিল সঞ্জয়। আর গাড়িটা একটি বাচ্চাকে বাঁচাতে গিয়ে উলটে গিয়েছিল রাস্তায়।

      বিশদে পড়তে এখানে ক্লিক করুন
      অণু গল্প

      পারিজাতের গল্প: নবজ্যোতি দাস

        রাস্তার পাশে বাঁ দিকের চায়ের দোকানে চা খেয়ে, বাঁ পকেট থেকে মিডিয়াম স্ট্যান্ডার্ডের গোল্ড ফ্লেকের প্যাকেট থেকে একটা সিগারেট বের করে ধরালো, লাঞ্চব্রেক, রিং হল না।

        বিশদে পড়তে এখানে ক্লিক করুন