Recent Post

চ্যালেঞ্জ(২য় পর্ব)

চ্যালেঞ্জ(২য় পর্ব) – অন্বেষা মণ্ডল

প্রথম পর্বটি পড়ার জন্য এখানে ক্লিক করুন

রবার্ট দাঁড়িয়ে আছে ভূত বাংলোর সামনে। কিছুক্ষণ পর স্টিভ, হ্যারি ও ব্রাউন এল সবার গায়ে ভূতের ড্রেস। আর হাতে মুখোশ। হঠাৎ জোরে একটা বিদ্যুৎ চমকাল আর সাথে ঝমঝম করে বৃষ্টি নামল। হ্যারি বলল, “চল বৃষ্টিতে না ভিজে বাড়ির ভিতরে যাই।”

তারা সবাই বাড়ির ভিতরে ঢুকল এবং একটা গন্ধ পেল। রবার্ট বলল, “অনেকদিন ধরে বন্ধ ছিল তো ওইজন্য গন্ধ আসছে। আয় ভিতরে আয়।” 

হঠাৎ পিছন থেকে ক্যাঁচ করে একটা শব্দ শুনে তারা ঘুরে দেখল যে দরজাটা বন্ধ হয়ে গেছে! সবাই একটু ভয় পেল। কিন্তু রবার্ট বলল, “ভয় পাস না। হাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে, যা জোরে হাওয়া – – – এ-এই আলো কী করে কমে গেলো?” 

“ম-মনে হয় র্-রাত হয়ে গেছে। ত্-তাই।”-ব্রাউন তোতলাতে তোতলাতে বলল। 

হঠাৎ একটা শব্দ শোনা গেল, ‘হু—হুহুহু—’ খুবই জোরে হচ্ছে শব্দটা। এবার সবাই খুব ভয় পেল। “এ-এটাও কী হাওয়া দদ্-দ্-দিচ্ছে?’-বলল হ্যারি। 

রবার্ট স্টিভকে বলল, “একবার চারিদিক দেখে আয় তো।” 

শোনা মাত্র স্টিভ ছুটে চলে গেল আর কিছুক্ষণ পর সে হাঁপাতে হাঁপাতে ফিরে এল। রবার্ট বলল, “ক্-কী হল?”

“ওই ব্-ব্-বন্ধ ঘরটা থেকে শ্-শ্-শব্দটা আসছিল। আ্-আ্-আমি কি-হোল দিয়ে দেখলাম।”-স্টিভ বলল। 

সবাই বলল, “কী দেখলি?”

তখন সে বলল, “একটা সাদা রঙের কাপড় পরা ল্-ল্-লম্বা ভূ-ভূ-ভূত!”

সবাই অবাক হয়ে গেল। ব্রাউন বলল, “ভূত-টূত কিছু হয় না। ওগুলো মনের ভুল।”

“তাই নাকি?” বলে একটা গম্ভীর গলার স্বর শোনা গেল। তারপর আবার সব চুপচাপ। রবার্টরা সবাই ভয়ে এমন ছোটাছুটি শুরু করল যে তার ফলে সে ও স্টিভ, হ্যারি ও ব্রাউনের থেকে আলাদা হয়ে গেল। রবার্ট ও স্টিভ ভয়ে ভয়ে এগোচ্ছে। তখন রবার্ট বলল, “ওরা দুজন কোথায় গেল?”

স্টিভ বলল, “জানি না। ওই দ্যাখ ওপরে ওঠার জন্য সিঁড়ি রয়েছে, চল গিয়ে দেখি যদি ওদেরকে খুঁজে পাওয়া যায়।”

দূরে কোথাও কুকুর ডেকে উঠল। রবার্ট ও স্টিভ উপরে উঠে গেল আর দেখল যে পুরনো দিনের যোদ্ধাদের ব্যবহৃত দুটি পোশাক দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। তারা সেই দুটোর সামনে গিয়ে দাঁড়াল। হঠাৎ তারা লক্ষ্য করল যে একটা যোদ্ধার পোশাকের হেলমেট থেকে এক জোড়া লাল রঙের চোখ তাদের দিকে তাকিয়ে আছে ! তারা দুজন মিলে “ভূ-ভূ-ভূত” করে চিৎকার করতে করতে ছুটে গিয়ে একটা ঘরে ঢুকে পড়ে। ঘরে ঢুকে তারা দুজন হাঁপাতে থাকে। হঠাৎ রবার্ট ফিসফিস করে বলল, “ওগুলো ক্-ক্-কী ?”

তার কথায় স্টিভ উপরে তাকিয়ে দেখল যে এক জোড়া নয়, দু-জোড়া নয়, একশো জোড়া লাল লাল চোখ তাদের দিকে তাকিয়ে আছে ! এবার তারা এতটাই ভয় পেল যে তারা ঘর থেকে বেরিয়ে সোজা বারান্দা দিয়ে ছুটতে শুরু করে দিল।

আবার জোরে একটা বিদ্যুৎ চমকাল। ঠান্ডা হাওয়া দিচ্ছে মাঝে মাঝে, হাল্কা শীতও করছে। তারই মধ্যে হাঁটছে ব্রাউন ও হ্যারি। কাঁপতে কাঁপতে দুজনে নীচে নেমে এল। চারিদিক কেউ যেন অন্ধকারের চাদরে ঢেকে দিয়েছে, কিচ্ছু দেখা যাচ্ছে না। হ্যারি বলল, “স্টিভ আর রবার্ট যে কোথায় গেল। এসেছিলাম তো রাহুলদের ভয় দেখাতে আর এখন নিজেরাই ভয়ে মরছি।”

এই বলে সে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। তখন ব্রাউন বলল, “আরে! দেখ ডানদিকের ঘরটা থেকে একটু আলো আসছে। চল গিয়ে দেখি।” 

দুজনে যেই সেদিকে যেতে যাবে এমন সময় তারা দেখল যে দেওয়ালে একটা বিশাল মাকড়সার ছায়া পড়েছে! সেটা যেন তাদের দিকেই এগিয়ে আসছে। ওরা দুজনে তখন “বাঁচাও! বাঁচাও!” বলে চিৎকার করতে করতে ছুটে উপরের দিকে চলে গেল। তাদের মনে হল দূর থেকে যেন কারও চিৎকার ভেসে এল। তারা যেতে যেতে দেখল যে একটা ভাঙা থামের পিছনে রবার্টের মতো দেখতে কে একজন শীতে কাঁপছে। হ্যারি ও ব্রাউন ভাবল যে সেটা রবার্ট। তাই তারা খুশি হয়ে ছেলেটার কাছে গিয়ে ডাকল, “এই রবার্ট! শুনতে পাচ্ছিস?”

যখনই কথাটা বলেছে তখন সে মুখ তুলে তাকাল। আর তারা দেখল যে সেটা রবার্ট নয়, সেটা হল একটা বীভৎস দেখতে মেয়ের মুখ! তারা দুজন ভয়ে ছুটতে শুরু করল। এমন সময়, তাদের সাথে কারোর যেন ধাক্কা লাগল। 

ক্রমশ ….

Author

  • Barun@Mukherjee

    নবতরু ই-পত্রিকার সম্পাদক বরুণ মুখোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৮৪ সালে। বীরভূম জেলার নানুর থানার শ্রীকৃষ্ণপুরের গ্রামের বাড়িতেই বড়ো হয়ে ওঠেন। আবাসিক ছাত্র হিসাবে বিদ্যালয় জীবন অতিবাহিত করেন বিশ্বভারতীর পাঠভবন ও উত্তর শিক্ষা সদনে। বাংলা সাহিত্যে স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ বরুণ মুখোপাধ্যায় বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত আছেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি ভালোবাসেন লেখালেখি করতে। এছাড়াও সাংস্কৃতিক চর্চা ও সৃজনশীল কাজকর্মের মধ্যে নিজেকে সর্বদা যুক্ত রাখেন। নতুন ছেলেমেয়েদের মধ্যে সাহিত্য সৃষ্টির উন্মেষ ঘটানোর জন্যই দায়িত্ব নিয়েছেন নবতরু ই-পত্রিকা সম্পাদনার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

শৈশবের গরমকাল: মধুরিমা বন্দ্যোপাধ্যায়
গদ্য- সাহিত্য স্মৃতিকথা

শৈশবের গরমকাল: মধুরিমা বন্দ্যোপাধ্যায়

    শীত বুড়ির চাদর পেড়িয়ে যখন গ্রীষ্মকাল আসে দাবদাহ যেন ভৈরব সন্ন‍্যাসীর মতন তাড়া করে। আমাদের ছোটবেলায় মুঠোফোন অনেক দূরের ব‍্যাপার লোডশেডিং এর পাড়ায় কার্টুন দেখাও ছিল শক্ত কাজ।

    বিশদে পড়তে এখানে ক্লিক করুন
    সূচিপত্র: নবতরু ই-পত্রিকা তৃতীয় বর্ষ, পঞ্চম সংখ্যা, মে-২০২৩
    সূচিপত্র

    সূচিপত্র:

      সম্পাদকীয়: বরুণ মুখোপাধ্যায়

      কবিতা/ছড়া:—
      অচিনপুরের যাত্রা: তীর্থঙ্কর সুমিত
      দখিনা বাতাস: বিবেক পাল
      পরিণতি: সরোজ চট্টোপাধ্যায়
      বোঝাপড়া: জয়িতা চট্টোপাধ্যায়
      ভ্রান্তির শ্লোক: আহবাব হাসনাত লাবিব
      সাঙাই মহব্বত: হামিদুল ইসলাম
      স্মৃতির বৈশাখে: প্রিয়াংকা রায়

      গদ্যসাহিত্য:—
      আয়নাবন্দি: জিৎ সরকার
      শৈশবের গরমকাল: ঈশিতা পাল
      চাঁদিফাটা আমার সেকাল: বন্দে বন্দিশ
      শৈশবের গরমকাল: মধুরিমা বন্দ্যোপাধ্যায়
      শৈশবের গরমকাল: সুব্রত চৌধুরী
      শৈশবের গরমকাল: ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায়
      গ্রীষ্মের দিনের টুকরো কথার স্মৃতি: প্রিয়াংকা রায়
      শৈশবের গরমকাল: সরোজ চট্টোপাধ্যায়

      ছবি/ফটোগ্রাফি:—
      গ্রাম্য বধূ: তৃষিতা ঘটক

      বিশদে পড়তে এখানে ক্লিক করুন
      শৈশবের গরমকাল: সুব্রত চৌধুরী
      গদ্য- সাহিত্য স্মৃতিকথা

       শৈশবের গরমকাল: সুব্রত চৌধুরী

        সেদিনও ছিল উষ্ণতার রুদ্র পরাক্রম-মন্দ্রিত দুপুরের নৈঃশব্দ্য। ছিল চৈত্র শেষে চড়ক, শিবের গাজন আর তুলসীতলায় বসুন্ধরার আয়োজন

        বিশদে পড়তে এখানে ক্লিক করুন