Recent Post

ক্যাপটেন বিক্রম বত্রার স্মরণে: সুমিত মুখোপাধ্যায়

ক্যাপটেন বিক্রম বত্রার স্মরণে: সুমিত মুখোপাধ্যায়

২২ বছর আগে ৭ জুলাই ১৯৯৯ সালে কারগিল হিরো ক্যাপটেন বিক্রম বত্রা নিজের সাথী অফিসারদের বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ ত্যাগ করেছিলেন। ওনার মৃত্যুর পর ওনার গল্প শুনে গোটা দেশ কেঁদেছিল। কারগিল যুদ্ধের কয়েকমাস আগে বিক্রম বত্রা ছুটিতে নিজের বাড়ি পালমপুর গিয়েছিলেন, আর সেখানে বন্ধুদের ট্রিট দিতে ন্যুগাল ক্যাফেতে নিয়ে গিয়েছিলেন।

সেখানে ওনাকে ওনার এক বন্ধু বলেন, “এবার তুমি সেনায় আছো। নিজের খেয়াল রাখবে।” 

এরপর বিক্রম বলেন, “আমার চিন্তা করোনা, আমি জিতে তিরঙ্গা উড়িয়ে আসব, আর নয়তো সেই তিরঙ্গাতেই মুড়ে আমাকে বাড়িতে আনা হবে। কিন্তু আমি আসব এটা নিশ্চিত।”

(ছবি: টাইমস নাউ)

ক্যাপটেন বিক্রম বত্রাকে পরমবীর চক্রে সম্মানিত করা হয়েছিল। এই সম্মান ওনাকে ১৯৯৯ সালে মরণোত্তর দেওয়া হয়েছিল। মাত্র ২৫ বছর বয়সেই তিনি দেশের স্বার্থে সর্বোচ্চ বলিদান দেন। হিমাচল প্রদেশের পালমপুরে ১৯৭৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেছিলেন বিক্রম বত্রা। ১৯ জুন ১৯৯৯ সালে বিক্রম বত্রার নেতৃত্বে ইন্ডিয়ান আর্মি পাকিস্তানিদের কাছ থেকে ৫১৪০ নং পোস্ট ছিনিয়ে নেয়। ওই পোস্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ আর স্ট্র্যাটেজিক ছিল।

ওই পোস্ট থেকে পাকিস্তানি অনুপ্রবেশকারীরা ভারতীয় সেনার উপর গুলি চালাচ্ছিল। আর এই পোস্টে ভারতীয় পতাকা উত্তোলন করার পর বিক্রম ৪৮৭৫ নং পোস্ট জয়ের জন্য চলে যায়। ওই পোস্ট সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৭ হাজার ফুট উচ্চতায় ছিল।

৭ জুলাই ১৯৯৯ সালে এক আহত অফিসারকে বাঁচাতে গিয়ে বিক্রম বত্রা প্রাণ হারান। ওই অফিসারকে বাঁচানোর সময় ক্যাপ্টেন বিক্রম বত্রা বলেছিলেন, “তুমি চলে যাও, তোমার বউ-বাচ্চা আছে।” বিক্রম বত্রার সঙ্গী নবীন ওনার সঙ্গেই বাঙ্কারে ছিল। নবীন বলেন, “আচমকাই একটি বোমা আমাদের পাশে এসে ফেটে যায়। আমি আহত হয়ে গিয়েছিলাম। বিক্রম তখনই আমাকে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। এরফলে আমি বেঁচে যাই, কিন্তু বিক্রম আর ফিরে আসেনা।”

দেশের মাটি রক্ষা করতে করতে নিজের প্রাণ বলিদান দিয়ে দেন হাসতে হাসতে। তাঁর বীরত্বের গল্প কেবলমাত্র ভারতেই নয় বরং পরম শত্রুদেশ পাকিস্তানেও জনপ্রিয়। সত্যি কথা বলতে কি, পাকিস্তানের সেনার মধ্যে তাঁর পরাক্রমের গল্প ছড়িয়ে পড়েছিল। সেইজন্যই পাকিস্তানের সেনারা তাঁর নাম শুনলেই ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে উঠত। এমনকি পাস্কিতানের সেনারাও তাঁকে নিজেদের মধ্যে ‘শের শাহ’ বলত।

Author

  • সুমিত মুখোপাধ্যায়

    হুগলি জেলার শ্রীরামপুরে ২০০২ সালে জন্মগ্রহণ করেন তরুণ কবি সুমিত মুখোপাধ্যায়। রিষড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র সুমিত মুখোপাধ্যায় ভালোবাসেন কবিতা ও গল্প লিখতে। অভিনয়েও শখ আছে তাঁর। তাঁর লেখা কবিতা ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

শৈশবের গরমকাল: ঈশিতা পাল
গদ্য- সাহিত্য স্মৃতিকথা

শৈশবের গরমকাল: ঈশিতা পাল

    আমার শৈশব ভাড়াবাড়িতে। তাই গরমের ছুটিতে কাকু, জেঠুদের বাড়ি টানা একমাস ছুটি কাটাতে যেতাম। মামাবাড়িও যেতাম। ছেলেবেলার গরমকাল জুড়ে বেশ কিছু মজার স্মৃতি আছে

    বিশদে পড়তে এখানে ক্লিক করুন
    চাদিফাঁটা আমার সেকাল: বন্দে বন্দিশ
    গদ্য- সাহিত্য স্মৃতিকথা

    চাঁদিফাটা আমার সেকাল: বন্দে বন্দিশ

      মনে পড়ে যায় ছেলেবেলার সেইসব দিন, প্রচন্ড গরম থেকে স্বস্থির আরাম

      বিশদে পড়তে এখানে ক্লিক করুন
      শৈশবের গরমকাল: মধুরিমা বন্দ্যোপাধ্যায়
      গদ্য- সাহিত্য স্মৃতিকথা

      শৈশবের গরমকাল: মধুরিমা বন্দ্যোপাধ্যায়

        শীত বুড়ির চাদর পেড়িয়ে যখন গ্রীষ্মকাল আসে দাবদাহ যেন ভৈরব সন্ন‍্যাসীর মতন তাড়া করে। আমাদের ছোটবেলায় মুঠোফোন অনেক দূরের ব‍্যাপার লোডশেডিং এর পাড়ায় কার্টুন দেখাও ছিল শক্ত কাজ।

        বিশদে পড়তে এখানে ক্লিক করুন