কোসাকুডা দ্বীপের রহস্য (৫ম পর্ব) – সুব্রত মজুমদার
চতুর্থ পর্বটি পড়ার জন্য এখানে ক্লিক করুন ।
দেখলাম একটা কাঠের বাংলোজাতীয় কিছু। ডিজিটাল বাইনোকুলারটা তুলে নিয়ে তাক করতেই দৃশ্যটা পরিস্কার হয়ে এল। কাঠের তৈরি বিশালাকার একটা ঘর। ঘরের বাইরে কতগুলো লোক পায়চারি করছে। ওদের হাতে আধুনিক অস্ত্র আর মাথায় হেলমেটের মতো কিছু।
বললাম, “কোনও জঙ্গিদলের বেসক্যাম্প বলেই মনে হচ্ছে। আপনার তথ্য যদি সত্যি হয় তবে এরা হীরাচোরের দল। এই এলাকাটাতে জাল বিছিয়ে রেখেছে যাতে কেউ সহজে ওদের কাছাকাছি পৌঁছতে না পারে।”
আমার হাত হতে বাইনোকুলারটা নিয়ে চোখে লাগিয়েই ইসুকি দেখতে বলল, “কিছু একটা করা দরকার। ওরাই রবার্টকে আটকে রেখেছে মনে হয়। কি বলেন মিস্টার শাভেজ ?”

শাভেজ বললেন, “আমি তো এতটা আসিনি কোনোদিন। হতে পারে। চলুন সাবধানে এগিয়ে যাই। পাহাড়ের এই দিকটা দিয়ে গেলে একটা মিষ্টি জলের স্রোতা পড়বে, ওদিকদিয়ে গেলে কারোর চোখে পড়ব না আমরা।”
বললাম, “আপনারা এগিয়ে যান, আমার বাথরুম পেয়েছে। আমি আসছি।”
আমার কাজ সেরে দ্রুত পায়ে এগিয়ে গেলাম। দেখলাম কিছু দূরেই দাঁড়িয়ে আছে দুজনে। একসঙ্গে এগিয়ে চললাম।
ঘরটার কাছাকাছি পৌঁছেই শাভেজ বলল, “আসুন ওইখানে পাহারা ঢিলে আছে, ওদিক দিয়েই এগিয়ে যাই। কি বলেন ইসুকি ?”
ইসুকি মাথা নেড়ে সায় দিয়ে বলল, “চলুন। এসো লোমহর্ষণ।”
এগিয়ে চললাম। কিন্তু কিছুটা এগিয়ে যাওয়ার পরই একটা ভাঙ্গা জানালা পাওয়া গেল। সেই জানালা দিয়ে ঢুকে পড়লাম তিনজনে। ভেতরটা বেশ আলো ঝলমলে। একটা আধুনিক অফিস আর মিলিটারি ক্যাম্পের সম্মিলিত রুপ। একদম শেষের দিকে একটা বিশাল লম্বা ঘর, সেখানে চলছে হীরা মাজাঘষার কাজ। হীরাগুলো দূর্লভ নীল রঙের।
চাপা গলায় বললাম, “ঠিকই বলেছ শাভেজ এই দ্বীপ রহস্যময় হয়ে উঠেছে হীরার চোরাকারবারীদের জন্য।”
কোনও উত্তর না পেয়ে পেছনফিরে তাকালাম। পেছনে কেউ নেই। আমি সভয়ে ঘর হতে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করলাম। কিন্তু পারলাম না। পেছন হতে একটা কিছু এসে আমাকে আঘাত করেছে। একটা বৈদ্যুতিক ঝটকা। কেউ ‘স্টান-গান’ চালিয়েছে।
মেঝে হতে ওঠার ক্ষমতা হল না। চারপাশ হতে কয়েকজন পাহারাদার এগিয়ে এসে আমাকে চ্যাংদোলা করে নিয়ে চলল মাঝের একটা ঘরের দিকে।
আমাকে বেঁধে রাখা হয়েছে। ওরা বলছে যে তাদের বস আমার সঙ্গে কথা বলতে চায়। একটু পরেই সে আসছে।
মিনিট কুড়ি পরেই ওদের বস এলো। সে আর কেউ নয়, স্বয়ং শাভেজ। আমার দিক শকুনের দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলল, “কেমন আছেন প্রফেসর ?”
বললাম, “বাঁধনের জায়গাগুলোতে ব্যাথা হচ্ছে।”
ও শয়তানি হাসি হেসে বলল, “ছেড়ে দেবো। তবে কয়েকটা দিন আমাদের সঙ্গ দিতে হবে। আমাদের বৈজ্ঞানিকরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে হীরা উত্তোলনের পদ্ধতি নিয়ে কাজ করছিলেন, কিন্তু একটা দূর্ঘটনায় গোটা ল্যাবরেটরি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আমাদের অধিকাংশ বৈজ্ঞানিকই মারা যায় সেই দূর্ঘটনায়। আমি চাই আপনি এই কাজটা শেষ করুন। “
Interesting