Recent Post

কলার বাকল: রানা জামান

জাবের ও নাভেদ বের হয়েছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল ভ্রমণে। ওরা চলে গেল নেত্রকোণা জেলার দুর্গাপুর উপজেলায়। সাদা সিমেণ্ট দেখবে। বাংলাদেশের আরেক মূল্যবান খনিজ; চিনামাটির তৈজসপত্র তৈরি করা হয়। পাহাড়ি এলাকায় ঘুরাঘুরি করতে ওদের বেশ লাগছে। ছোট ছোট পাহাড়ে উঠে ছবি তুলছে দেদার, সেল্ফিও নিচ্ছে। সকাল এগারোটা বাজছে। খিদে খিদে ভাব অনুভব করছে পেটে। চা পানের আগে কিছু একটা খেতে হবে। এদিকে কোনও হাট বা বাজার নেই। হাঁটতে হাঁটতে ওরা এক গ্রামে একটি মুদির দোকানে এল। কলার কাঁদি ঝুলছে এবং বিস্কুটের বয়াম আছে।

জাবের বললো, বিস্কুট খেতে পারি; কিন্তু কলা খাব না কিছুতেই!

নাভেদ ভ্রু নাচিয়ে বললো, কলা কী সমস্যা করল রে বন্ধু?

কেন জানি না ছোটবেলা হতেই কলা আমার পছন্দ না!

Nabataru-e-Patrika-2023-9.jpg

কলা একটা নির্ভেজাল খাদ্য। গ্রামের কলা আরও নির্ভেজাল। কোন কেমিক্যাল দিয়ে পাকায় না।

তুই খা! আমি বিস্কুটে থাকি!

ওদের কথা শুনে দোকানিও নিজ কলার প্রশংসা করে বললেন যে এই কলা নিজ গাছের; কোনো ভেজাল নাই; পেট ভর্তি করে খেতে পারে।

দোকানদার এক হালি কলা কেটে ওদের দিকে বাড়িয়ে ধরলে নাভেদ কলাগুলো নিল। বয়াম খুলে বিস্কুট নিল। নাভেদ দুটো কলা খেলেও জাবের কোনো কলা খেল না।

চা পান করে ওরা ফের হাঁটছে। নাভেদের হাতে কলা দুটো। দুপুর দু’টায় এক বটগাছের নিচে বসে দুই বন্ধু বিশ্রাম নিচ্ছে। এপ্রিল মাসের রোদে যথেষ্ট তেজ। ওরা ঘামছে।

জাবের নাভেদের দিকে হাত বাড়ালে নাভেদ বুঝতে না পেরে বলল, কী চাস?

জাবের বললো, বেশ খিদে লেগে গেছে। একটা কলা দে খাই।

নাভেদ খুশি হয়ে একটা কলা জাবেরকে দিয়ে আরেকটা নিজে খেয়ে নিল। ওরা ফের হাঁটছে। সন্ধ্যার প্রাক্কালে ওরা ফিরে চললে ডেরার দিকে। সেই বটগাছ তলায় আসতে আসতে সন্ধ্যা পার। সেখানে বিশ্রাম নেবার মানসে শিথিলভাবে গাছতলায় হাঁটছে দু’জন। পা পিছলে পরে গেল জাবের। বেশ ব্যথা পেয়েছে কোমরে। উঠতে পারছে না একা।

নাভেদ ওকে তুলতে এসে পায়ের দিকে তাকালো ভ্রু কুঁচকে। বস্তুটা তুলে জাবেরকে দেখিয়ে বললো, নিশ্চয়ই তুই কলার বাকলটা এখানে ফেলে গিয়েছিলি। কলা মজার হলেও বাকল খতরনাক!

Author

  • রানা জামান

    একাধারে কবি ও লেখক রানা জামান ১৯৬০ সালে বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। এমএসসি, এলএলবি ও এমবিএ উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি দফতরে চাকরি করেছেন দীর্ঘদিন। বর্তমানে তিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা(অতিরিক্ত সচিব)। লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত আছেন ছোটবেলা থেকেই। পাশাপাশি ভালোবাসেন সিনেমা দেখতে। এ-যাবৎ তাঁর ৯৩ টি বই প্রকাশিত হয়েছে, দু'টি ইংরেজি কবিতার বইও আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ছোটো গল্প

বোকার চালাকি: সৌমেন দেবনাথ

    দেখতে যেমন বোকা বোকা, কথাবার্তায়ও তেমন বোকা বোকা। কাজে-কর্মের ধরণ-ধারণেও বোকামি বোকামি ভাব। চলন-বলনেও বোকা বোকা দেখতে লাগা মানুষটার নাম আক্কাস। সহজ-সরল আর আলাভোলা এই লোকটাকে নিয়ে আমরা যথেষ্ট  মজা-মশকরা করি। যখন মন চায় তখনই তাকে ডেকে নিয়ে যেদিক সেদিক চলে যাই।

    বিশদে পড়তে এখানে ক্লিক করুন
    ছোটো গল্প

    মানসী: তুলি মুখোপাধ্যায় চক্রবর্তী

      হঁ বাবু, যে শরীর তুকে শান্তির ঘুম দেয়, একটা ছবি থাকবেনি তার! কুতোওও ছবি তুর আঁকা, বিকোয় দেশ বিদেশ, একটা লয় ইখানেই থাইকবে, মাটির ঘরে

      বিশদে পড়তে এখানে ক্লিক করুন
      ছোটো গল্প

      সাপ-ওঝা: তুলি মুখোপাধ্যায় চক্রবর্তী

        পাড়ায় ছোটখাটো মাস্তানি করতে করতে ক্লাব সেক্রেটারি। পার্টির নেতাদের নেকনজরে কাউন্সিলর থেকে এমএলএ। মৌরুসীপাট্টার দোপাট্টা গলায় বারো পাশ শ্রীমান রতন সমাদ্দার

        বিশদে পড়তে এখানে ক্লিক করুন