জাবের ও নাভেদ বের হয়েছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল ভ্রমণে। ওরা চলে গেল নেত্রকোণা জেলার দুর্গাপুর উপজেলায়। সাদা সিমেণ্ট দেখবে। বাংলাদেশের আরেক মূল্যবান খনিজ; চিনামাটির তৈজসপত্র তৈরি করা হয়। পাহাড়ি এলাকায় ঘুরাঘুরি করতে ওদের বেশ লাগছে। ছোট ছোট পাহাড়ে উঠে ছবি তুলছে দেদার, সেল্ফিও নিচ্ছে। সকাল এগারোটা বাজছে। খিদে খিদে ভাব অনুভব করছে পেটে। চা পানের আগে কিছু একটা খেতে হবে। এদিকে কোনও হাট বা বাজার নেই। হাঁটতে হাঁটতে ওরা এক গ্রামে একটি মুদির দোকানে এল। কলার কাঁদি ঝুলছে এবং বিস্কুটের বয়াম আছে।
জাবের বললো, বিস্কুট খেতে পারি; কিন্তু কলা খাব না কিছুতেই!
নাভেদ ভ্রু নাচিয়ে বললো, কলা কী সমস্যা করল রে বন্ধু?
কেন জানি না ছোটবেলা হতেই কলা আমার পছন্দ না!

কলা একটা নির্ভেজাল খাদ্য। গ্রামের কলা আরও নির্ভেজাল। কোন কেমিক্যাল দিয়ে পাকায় না।
তুই খা! আমি বিস্কুটে থাকি!
ওদের কথা শুনে দোকানিও নিজ কলার প্রশংসা করে বললেন যে এই কলা নিজ গাছের; কোনো ভেজাল নাই; পেট ভর্তি করে খেতে পারে।
দোকানদার এক হালি কলা কেটে ওদের দিকে বাড়িয়ে ধরলে নাভেদ কলাগুলো নিল। বয়াম খুলে বিস্কুট নিল। নাভেদ দুটো কলা খেলেও জাবের কোনো কলা খেল না।
চা পান করে ওরা ফের হাঁটছে। নাভেদের হাতে কলা দুটো। দুপুর দু’টায় এক বটগাছের নিচে বসে দুই বন্ধু বিশ্রাম নিচ্ছে। এপ্রিল মাসের রোদে যথেষ্ট তেজ। ওরা ঘামছে।
জাবের নাভেদের দিকে হাত বাড়ালে নাভেদ বুঝতে না পেরে বলল, কী চাস?
জাবের বললো, বেশ খিদে লেগে গেছে। একটা কলা দে খাই।
নাভেদ খুশি হয়ে একটা কলা জাবেরকে দিয়ে আরেকটা নিজে খেয়ে নিল। ওরা ফের হাঁটছে। সন্ধ্যার প্রাক্কালে ওরা ফিরে চললে ডেরার দিকে। সেই বটগাছ তলায় আসতে আসতে সন্ধ্যা পার। সেখানে বিশ্রাম নেবার মানসে শিথিলভাবে গাছতলায় হাঁটছে দু’জন। পা পিছলে পরে গেল জাবের। বেশ ব্যথা পেয়েছে কোমরে। উঠতে পারছে না একা।
নাভেদ ওকে তুলতে এসে পায়ের দিকে তাকালো ভ্রু কুঁচকে। বস্তুটা তুলে জাবেরকে দেখিয়ে বললো, নিশ্চয়ই তুই কলার বাকলটা এখানে ফেলে গিয়েছিলি। কলা মজার হলেও বাকল খতরনাক!