Recent Post

অস্টিওআর্থারাইটিস প্রতিরোধে আদার ভুমিকা (১ম পর্ব): শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়

অস্টিওআর্থারাইটিস প্রতিরোধে আদার ভুমিকা (১ম পর্ব): শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়

অস্টিওআর্থারাইটিস আমাদের একটি অতি সুপরিচিত Degenerative Joint Disorder অর্থাৎ এই রোগটি আমাদের অস্থিসন্ধি বা Joints সংক্রান্ত একটি রোগ। এই রোগে আমাদের দেহের অস্থিসন্ধিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিশেষ করে আমাদের Knee Joint বা হাঁটুর অস্থিসন্ধি সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমাদের এই Knee joints এর একটি ডাক্তারি পরিভাষা হল Articular Cartilage এবং এই রোগে এই Articular Cartilage সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই রোগটি আমাদের Articular Cartilage ছাড়াও হাত, স্পাইনাল কর্ড এবং Hip joint এও দেখা যায়। এই রোগে ক্ষতিগ্রস্ত অস্থিসন্ধিস্থল বা Joints সমূহ ফুলে ওঠে এবং লাল হয়ে যায়, এর ফলে ওই স্থানটিকে স্পর্শ করলে গরম অনুভূত হয়। আক্রান্ত ব্যাক্তি হাঁটতে গেলে ওই সব অংশ থেকে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করেন।

অস্টিওআর্থারাইটিস প্রতিরোধে আদার ভুমিকা
অস্টিওআর্থারাইটিস প্রতিরোধে আদার ভুমিকা

এবার আমাদের সবার মনেই একটি প্রশ্ন জাগে তাহলে এই রোগে মূলত কারা বেশি আক্রান্ত হয়? অস্টিওআর্থারাইটিস হবার কোনো নির্দিষ্ট বয়স বা লিঙ্গ থাকেনা। এই রোগটি যেকোনো লিঙ্গের এবং যেকোনো বয়সের মানুষের মধ্যে ঘটে থাকে। 

             রজঃচক্র বা Menstrual cycle চলাকালীন মহিলারা এই রোগে আক্রান্ত হয় না কারণ রজঃচক্র চলাকালীন মহিলাদের রক্তে Estrogen হরমোন এর পরিমাণ খুব বেশি থাকে এবং এই Estrogen হরমোন তখন মহিলাদের Bone Development করতে সহায়তা করে। কিন্তু ৪৫ বছর বা ৫৫ বছর বয়সে যখন মহিলাদের এই রজঃচক্র বা Menstrual cycle বন্ধ হয়ে যায় তখন তাদের রক্তে Estrogen-এর পরিমানও কমে যায় যার ফলে তখন মহিলাদের হাড় সমূহ ভঙ্গুর হয়ে পড়ে এবং তাঁরা তখন খুব সহজেই এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।

আরো পড়ুন – কোভিড অতিমারি ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য

               এই করোনা মহামারির সময় আমরা ঘরে আছি এবং আমরা সবাই এখন Work From Home করছি তাই এই সময় আমাদের কোনো দৈহিক পরিশ্রমের কাজ করা হয়ে উঠছেনা যার ফলে আমাদের জীবনশৈলী খুব অলসভরা হয়ে উঠেছে এর ফলে আমাদের মধ্যে মেদাধিক্য বা Obesity র প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এর ফলে আমাদের দেহের Abdominal cavity-তে ফ্যাটের accumulation বৃদ্ধি পাচ্ছে তাই আমাদের দেহ ভারী হয়ে যাচ্ছে আর আমাদের দেহের এই অতিরিক্ত ভার এসে পড়তে থাকে আমাদের হাঁটুতে অবস্থিত Articular Cartilage-এ এই Articular Cartilage আমাদের Weight Bearing Joint। এভাবে দীর্ঘদিন অতিরিক্ত ওজন Articular Cartilage-এ এসে পড়ার ফলে ওই অস্থিসন্ধি ভঙ্গুর হয়ে পড়ে এবং আমরা অতিসহজেই এই রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ি।

অস্টিওআর্থারাইটিস প্রতিরোধে আদার ভুমিকা

খুব পরিশ্রমের খেলা যেমন রাগবি, বাস্কেট বল, ক্রিকেট, ফুটবল প্রভৃতির সঙ্গে যুক্ত যেসব ব্যাক্তিরা তাঁরা এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন কারণ এইসব খেলাতে পায়ের অস্থিসন্ধীতে খুব চাপ পড়ে এবং যার ফলে ওই স্থানটি ফুলে ওঠে এবং ব্যথা শুরু হয়। অর্থাৎ এই ব্যাক্তিদের যখন কোনো Sports Injury হয় তখন সেই আঘাতপ্রাপ্ত স্থান থেকে ব্যথা শুরু হতে পারে যার ফলে ভবিষ্যতে এই রোগটি হতে পারে।

অস্টিওআর্থারাইটিস প্রতিরোধে আদার ভুমিকা

(ক্রমশ)

Author

  • শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়

    উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার হালিশহর নিবাসী তরুণ লেখক শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম ২০০১ সালে। ছোটো থেকেই তাঁর বিজ্ঞান বিষয়ে পড়া ও লেখার প্রতি ছিল গভীর ভালোবাসা। হালিশহর রামপ্রসাদ বিদ‍্যাপীঠে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বিজ্ঞান শাখায় পড়াশোনা করেন। তাঁর প্রিয় বিষয় হল পুষ্টিবিজ্ঞান। তাই পরবর্তীতে কাঁচরাপাড়া কলেজ থেকে পুষ্টিবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক উত্তীর্ণ হয়ে বর্তমানে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে উক্ত বিষয়ে স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তি হয়েছেন। পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও অনলাইন ম্যাগাজ়িনে নিয়মিত লেখালেখি করেন তিনি। বই পড়তেও তিনি বিশেষ ভালোবাসেন। তাঁর লেখা বিজ্ঞানভিত্তিক নিবন্ধ নবতরু ই-পত্রিকায় নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হচ্ছে।

2 thoughts on “অস্টিওআর্থারাইটিস প্রতিরোধে আদার ভুমিকা (১ম পর্ব): শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞানভিত্তিক রচনা

হৃদরোগ প্রতিরোধে আমলকির ভূমিকা: শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়

    হৃদসংবহন তন্ত্র, মস্তিষ্ক, বৃক্ক ও প্রান্তিক ধমনী সম্পর্কিত, রোগকে হৃদরোগ বলে। হৃদরোগের অনেক কারণ থাকতে পারে, তবে উচ্চ রক্তচাপ ও অ্যাথেরোসক্লোরোসিস প্রধান। পাশাপাশি, বয়সের সাথে সাথে হৃৎপিণ্ডের গঠনগত ও শারীরবৃত্তিক পরিবর্তন হৃদরোগের জন্য অনেকাংশে দায়ী,

    বিশদে পড়তে এখানে ক্লিক করুন
    বিজ্ঞানভিত্তিক রচনা

    ক্যানসার সৃষ্টিতে রেট্রোভাইরাস এর ভূমিকা: শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়

      এই কোষবিভাজন তখন অনিয়ন্ত্রিত ভাবে হতে থাকে তখন আমাদের শরীরের স্থানে স্থানে টিউমারের সৃষ্টি হয়। এই টিউমার বিনাইন বা ম্যালিগন্যান্ট হতে পারে। ম্যালিগন্যান্ট টিউমারকেই ক্যানসার বলে। 

      বিশদে পড়তে এখানে ক্লিক করুন
      বিজ্ঞানভিত্তিক রচনা

      LACTOSE INTOLERANCE: শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়

        Lactose intolerance কী তা জানার আগে আমাদের জানতে হবে Lactose কী? এটি কীভাবে আমাদের পরিপাকনালীতে পরিপাককৃত হয়? এবং এই Lactose এর উৎস কী? প্রথমে আমরা জেনে  নিই Lactose কী?

        বিশদে পড়তে এখানে ক্লিক করুন